ফাইল চিত্র।
শহরের সঙ্গে মিলল না জেলার ছবি।
বৃহস্পতিবার বঙ্গ বিধানসভার অষ্টম ও শেষ দফার নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি স্বস্তি দিয়েছে তিন জেলার সাধারণ ভোটারদের। কিন্তু শহর কলকাতায় আধাসেনার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর কলকাতার ভোটে সংবাদমাধ্যমের কাজে বাধা দান, ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার মতো ঘটনার পাশাপাশি মহিলা সংবাদকর্মীকে হেনস্থা, সাধারণ মহিলা ভোটারদের উপরে চড়াও হওয়া এবং লাঠি মারার অভিযোগে বিদ্ধ কেন্দ্রীয় বাহিনী।
তবে ভোটারদেরই একাংশের দাবি, যদিও কলকাতাতেও এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা মোটের উপরে সন্তোষজনক। টালা পার্কের মোহিত মৈত্র মঞ্চের ভোট কেন্দ্রে ছবি তুলতে গিয়ে বাহিনীর জওয়ানদের হাতে হেনস্থার শিকার হন আনন্দবাজার পত্রিকার চিত্র-সাংবাদিক স্বাতী চক্রবর্তী। কাশীপুর-বেলগাছিয়াতেও সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আধাসেনার বিরুদ্ধে। মানিকতলা কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী মহিলাদের উপরে লাঠি চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী সাধন পাণ্ডের মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডে। ভোটারদের অনেকে অবশ্য জানান, গোলমাল আটকানোর ক্ষেত্রে বাহিনীর ভূমিকা সদর্থক ছিল।
মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম জুড়ে একেবারে অন্য এক ছবি। ভোট যে গণতন্ত্রের উৎসব, তা এক প্রকার ভুলতেই বসেছিলেন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দারা। ভোটকে ঘিরে বোমাবাজি, সংঘর্ষ ছিল মুর্শিদাবাদের নির্বাচনের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু এ বার দু’-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে মুর্শিদাবাদের মানুষ উৎসবের মেজাজে ভোট দিলেন। ভোটের লাইনে গুঁতোগুঁতি, বচসা ছাড়াই অবাধে শান্তিপূর্ণ ভাবে নিজের ভোট নিজে দেওয়ার সুযোগ পেলেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী অপ্রয়োজনে কাউকে বুথের কাছে ভিড়তে দেয়নি। ভোটদানের পরে কেউ বুথের কাছে দাঁড়ালেই জওয়ানেরা সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দিয়েছেন।
বীরভূমে ভোট হয়েছে ২৩০ কোম্পানি বাহিনীর উপস্থিতিতে। বুথ-চত্বরে কড়া নজর ছিল জওয়ানদের। বুথের ধারে পাশে জটলা করতে কিংবা সাইকেল, মোটরবাইক, গাড়ি দাঁড় করাতেও দেননি তাঁরা। ভোটের লাইনের বাইরে অকারণে কাউকে অপেক্ষা করতে দেখলেই জওয়ানেরা তাঁদের সরিয়ে দিয়েছেন বা প্রশ্ন করেছেন। শাসক দলের দু’-একটি অভিযোগ ছাড়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকায় সাধারণ ভাবে সন্তুষ্ট বাম ও বিজেপি।
বিরোধীদের বক্তব্য, ভোট শান্তিপূর্ণ রাখতে ভাল ভূমিকা নিয়েছে বাহিনী ও জেলা পুলিশ। তবে এ দিন কর্তব্যরত অবস্থায় সিআরপি-র আইজি তারাপীঠে পুজো দেন। এটা করা যায় কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে।