ভোটের আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গল্ফগ্রিনে টহল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। কিন্তু অনেকেই মাস্কহীন। বৃহস্পতিবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
রাজ্যে পা রাখা ইস্তক কেন্দ্রীয় বাহিনী শাসক দল তৃণমূলের নিশানায়। তাঁদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি, বিজেপিকে ভোট দিতে বলছে বাহিনী। সম্প্রতি আরও এক ধাপ এগিয়ে জনসভায় মহিলা ভোটারদের উদ্দেশে তাঁর আহ্বান, ‘‘সিআরপি যদি গন্ডগোল করে, এক দল ওদের ঘেরাও করে রাখবেন, আর এক দল ভোট দিতে যাবেন।’’ এই ‘প্রবল চাপের মুখে’ বাহিনীর দাবি, এ সব নালিশের প্রভাব তাদের কাজে পড়ে না। পক্ষপাতের অভিযোগও সটান উড়িয়ে দিচ্ছে তারা।
মহিলাদের ঘিরে ধরার ডাক প্রসঙ্গে কর্তাদের বক্তব্য, যে-বাহিনীর জওয়ানেরা ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদীদের গুলির সামনে লড়াই করেন, বঙ্গের মহিলারা ঘিরে ধরলে, তাঁদের খুব সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
বাংলার ভোটে সিআরপি বা সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশের বাহিনী বেশি সংখ্যায় কাজ করছে। কাকতালীয় ভাবে যে-তিন অফিসার এই মুহূর্তে তার শীর্ষ পদে, তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আইপিএস। ডিজি কুলদীপ সিংহ। অতিরিক্ত ডিজি সঞ্জয় চন্দ এবং জুলফিকার হাসান। দীর্ঘদিন এ রাজ্যে কাজ করেছেন তাঁরা। কাজ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানাতেও।
বৃহস্পতিবার কুলদীপ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বাহিনী কাজ করছে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে, কমিশনে জানাতে হবে। কমিশন জেলাশাসক বা পুলিশ সুপার পদের কাউকে দিয়ে তদন্ত করাবে। অভিযোগে সত্যতা থাকলে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কিন্তু এই যে বিজেপির পক্ষে ভোট দিতে বলার অভিযোগ? দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক কর্তার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই যে, কোনও জওয়ান ভোটারকে বিশেষ একটি দলের অনুকূলে ভোট দিতে বলেছেন, তা হলে সেই ভোটার তা শুনবেন কেন? বিশ্বাস করি না, কোনও জওয়ান এমন বলতে পারেন।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কমান্ডান্টের কথায়, ‘‘কমিশনের নির্দেশ পালন করছি। পুলিশ যেমন বলছে, তা-ও মেনে চলা হচ্ছে। পক্ষপাতের প্রশ্ন নেই।’’
বাহিনীর এক কর্তা বলেন, ‘‘সাধারণত কে কী বললেন, তা নিয়ে জওয়ানদের মাথাব্যথা থাকে না।... এক জায়গার কাজ শেষ করে বিছানা গুছিয়ে নির্দেশ মাফিক অন্য জায়গায় কাজের জন্য বেরিয়ে পড়েন তাঁরা।’’
রাজনৈতিক দলের অভিযোগ আছে। ভোটারদের তরফে খুচরো অভিযোগ যে একেবারে নেই, এমন নয়। কিন্তু পদ্মের প্রতি ‘পক্ষপাতের সেই পাঁক’ বঙ্গ ভোটে উর্দিতে লাগেনি বলেই বাহিনীর কর্তাদের দাবি।