ভিড়ে-ঠাসা: অশোকনগরে বক্তৃতা করছেন আব্বাস সিদ্দিকী। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
বিধানসভা ভোটে এ বার অশোকনগর কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার দাবি ছিল সিপিএমের। দীর্ঘ আলোচনার পরে অবশ্য প্রার্থী দেয় আইএসএফ। জোটের স্বার্থে জেলা ও স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব তা মেনেও নিয়েছিলেন। যদিও নিচুস্তরে কর্মী-সমর্থকদের একাংশ ওই ঘটনায় হতাশ হয়েছিলেন। ফলে শুরুর দিকে প্রচারে তেমন জোর ছিল না মোর্চা শিবিরে। তবে রবিবার হরিপুরে সংযুক্ত মোর্চার সভায় উপচে পড়া ভিড় প্রমাণ করল, বাম কর্মী-সমর্থকেরাও জোট প্রার্থীকে জেতাতে প্রাথমিক হতাশা ঝেড়ে ফেলে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। এ দিনের সভা ছিল অশোকনগরের আইএসএফ প্রার্থী তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে। প্রধান বক্তা ছিলেন আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকী, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। দুপুরের চড়া রোদ উপেক্ষা করে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ কর্মীরা এক সঙ্গে মিছিল করে মাঠে আসতে শুরু করেন। সভার শুরুতে মঞ্চে শিল্পীদের গণসঙ্গীতের সঙ্গে মাঠে উপস্থিত জনতা এক সঙ্গে গলা মেলান। সিপিএমের দাবি, এ দিনের সভায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ এসেছিলেন। যা সাম্প্রতিক সময়ে অশোকনগরে বাম বা জোটের সভায় হয়নি।
সিপিএমের অশোকনগর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘২০০৯ সালে লোকসভা ভোটের সময়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় অশোকনগরে শেষবার এত ভিড় হয়েছিল। এ দিনের সভায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ এসেছিলেন। বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের উপস্থিত ছিল উল্লেখযোগ্য।’’
সভা সফল করতে বিধানসভা এলাকায় জোটের পক্ষ থেকে কয়েক দিন ধরেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রস্তুতি পর্বে যৌথ ভাবে ১২টি পথসভা করা হয়েছিল। যা জনসভার আকার নিয়েছিল। পোস্টার সাঁটানো হয়। পথনাটক করা হয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে কর্মীরা প্রচার করেছেন।
এ দিন আব্বাস-বিমানবাবুরা সভাস্থলে আসতেই জনতার হুড়োহুড়ি ছিল চোখে পড়ার মতো। শ’য়ে শ’য়ে মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বলে ওঠে। মঞ্চে হাবড়ার সিপিএম প্রার্থী ঋজিনন্দন বিশ্বাসও ছিলেন। দুই প্রার্থীর হাত ধরে আব্বাস ও বিমান তাঁদের জেতানোর আহ্বান করেন। আব্বাস বলেন, ‘‘আমাদের সভায় এত ভিড় দেখে দিদি-মোদী টেনশনে পড়ে গিয়েছেন।’’ নাগরিকত্ব নিয়ে বিজেপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘বলছে নাগরিকত্ব দেব। দিতে কে বারণ করেছে? কিন্তু আমরা চাই নিঃশর্ত নাগরিকত্ব। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আদিবাসী মতুয়া সমাজের মানুষের উপরে সব থেকে বেশি অত্যাচার হবে।’’ তৃণমূলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘যত পদ্ম ফুটে আছে সব এসেছে জোড়াফুলের কারখানা থেকে।’’ বিমান বলেন, ‘‘তৃণমূল-বিজেপি যে পথে চলছে, তাতে রাজ্য রসাতলে চলে যাবে। ওরা বোঝাপড়া করে চলছে।’’
তাপস বলেন, ‘‘অশোকনগরকে গরুর করিডর তৈরি না করতে চাইলে আমাদের জয়ী করুন।’’