প্রচারে মহম্মদ সেলিম। শনিবার চণ্ডীতলায়। ছবি: দীপঙ্কর দে।
তৃণমূল তাঁকে বলছে ‘বহিরাগত’। কিন্তু চণ্ডীতলা সম্পর্কে তাঁর ‘হোমওয়ার্কে’ যে ঘাটতি নেই, শনিবার, প্রথম দিন প্রচারে এসেই বুঝিয়ে দিলেন সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মহম্মদ সেলিম।
সিপিএমের এই পলিটবুরো সদস্য প্রার্থী হওয়ায় চণ্ডীতলা কেন্দ্র ঘিরে রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট আগ্রহ তৈরি হয়েছে। দলীয় কর্মীদের মধ্যে বাড়তি উদ্যম এসেছে। এখানে সেলিমের প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের বিদায়ী বিধায়ক স্বাতী খন্দকার। বিজেপি এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তারা জানিয়েছে, নির্বাচনী লড়াইতে তৃণমূল এবং মোর্চাকে হারাতে তারা তৈরি। তবে, পোড়খাওয়া বাম নেতা সেলিম বিরোধীদের সম্পর্কে নানা প্রশ্ন তুলে যুবসমাজের কাছে কর্মসংস্থানের বার্তা পৌঁছে দিলেন এ দিন। সঙ্গে বিলিয়েছেন স্থানীয় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস।
সকালে সেলিমের প্রচার শুরু হয় সংলগ্ন পঞ্চবটী এলাকা থেকে। জনাই বাজার, হাটপুকুর, কুমিরমোড়া হয়ে বারাসত এলাকায় তা শেষ হয়। বাম-কংগ্রেস এবং আইএসএফ কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন। ছিলেন হুগলি জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ, এলাকার প্রাক্তন দলীয় বিধায়ক ভক্তরাম পানও। মহিলারা কাস্তে-হাতুড়ি-তারা চিহ্নের ছাপ দেওয়া শাড়ি পরে পা মেলান। জনাই বাজারে সাধারণ মানুষ ফুল ছুড়ে সেলিমকে স্বাগত জানান। কখনও পথচলতি মানুষের সঙ্গে করমর্দন করে, কখনও দোকানের ভিতরে ঢুকে ভোটপ্রার্থনা করতে দেখা যায় তাঁকে।
বিকেলে চণ্ডীতলার পঞ্চাননতলা থেকে নৈটি পোলধার পর্যন্ত মিছিল করেন সেলিম। তার পরে কর্মিসভা। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেলিম জানিয়ে দেন, শিল্পায়ন এবং বেকার যুবক-যুবতীদের কাজের ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্যের পরিকাঠামোর উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁদের লড়াই। তিনি বলেন, ‘‘চণ্ডীতলায় দীর্ঘদিন আবেগের মধ্যে দিয়ে ভোট হয়েছে। এখান থেকে যাঁরা বিধানসভায়, লোকসভায় গিয়েছেন, তাঁরা নিজেদের ফুলেফেঁপে ওঠার ব্যবস্থা করেছেন। আর তা হবে না। এ বার যৌবনের আবেগে ভোট হবে।’’
সেলিমের দাবি, তাঁরা যখন যুব আন্দোলন করেছেন, তখন ডানকুনিতে উড়ালপুলের জন্য লড়াই করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আজ এখানে সরস্বতী নদী, খাল-বিল সব মজে গিয়েছে। এগুলি সেচের কাজে লাগত। জলের সমস্যা মেটাত। যাঁরা পুকুর বোজাচ্ছে, পুকুর চুরি করছে তারা নদী সংস্কার করবে! কখনও করবে না।’’
এ বারের নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থীদের মধ্যে অনেক তরুণ মুখ। সেই প্রসঙ্গ এনে সেলিম নিজেকে কার্যত খেলার অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের ভূমিকায় দেখাতে চেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যুব বাহিনী লড়াইয়ে নামলে কোচ দরকার হয়। সে জন্যই আমার আসা।’’
তৃণমূলের তাঁকে ‘বহিরাগত’ বলার বিষয়টি ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা।