West Bengal Assembly Election 2021

bengal election: কোভিড-বিধি উধাও একাধিক ভোট-শিবিরে

এই প্রসঙ্গেই উত্তর ২৪ পরগনা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ব্যারাকপুরে পরিস্থিতি ভাল নয়। কর্মীদের অনেকেরই কোভিড সংক্রমণ হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:১৫
Share:

ব্যারাকপুর প্রশাসনিক ভবনে ভোটকর্মীরা। বুধবার। ছবি: মাসুম আখতার

ব্যারাকপুরের ভোটকর্মীদের সরঞ্জাম বিলি ও গ্রহণ শিবির (ডিসিআরসি)। বুধবার সকালে সেখানে ঢোকার মুখেই প্রায় আঁতকে উঠলেন এক জন প্রিসাইডিং অফিসার। সামনে থিকথিক করছে ভিড়। দূরত্ববিধি শিকেয়, অনেকেই মাস্ক থুতনিতে নামিয়ে রেখেছেন। কোভিড পরিস্থিতিতে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন যে সব বিধির কথা শুনিয়েছে তার পালন অন্তত এই শিবিরে এ দিন চোখে পড়েনি। অনেকেই তাই বলছেন, কমিশন যখন প্রচারে কোভিড বিধি পালনের জন্য কড়া পদক্ষেপ করছে, তখন প্রশাসনের শিবিরে এই অবস্থা কেন?

Advertisement

এই প্রসঙ্গেই উত্তর ২৪ পরগনা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ব্যারাকপুরে পরিস্থিতি ভাল নয়। কর্মীদের অনেকেরই কোভিড সংক্রমণ হয়েছে। এক আধিকারিকের গাড়িচালক কোভিড আক্রান্ত। তিনি নিজেই গাড়ি চালিয়ে যাতায়াত করছেন। এই পরিস্থিতিতে অধিক সতর্কতা প্রয়োজন ছিল। তবে শুধু ব্যারাকপুরকে কাঠগড়ায় তুললে ভুল হবে। ভোটমুখী চার জেলা, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান এবং উত্তর দিনাজপুরের বহু ডিসিআরসি-তেই এ দিন কোভিড বিধি লঙ্ঘনের ছবি ধরা পড়েছে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্টের কড়া বার্তা পাওয়ার পর রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর রাজনৈতিক প্রচারের ভিড়ে রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু অনেকে বলছেন, জনসভায় হিসেবহীন ভিড় হয়। সেখানে রাশ টানা কঠিন হতে পারে। কিন্তু এই ধরনের শিবিরে তো হিসেব অনুযায়ী কর্মীরা আসেন। সেখানে রাশ টানতে পারা অনেক সহজ।

Advertisement

এ দিন বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ের ডিসিআরসি-তে গিয়ে দেখা গেল, সর্বত্রই থিকথিকে ভিড়। ভোটকর্মীদের মুখে মাস্ক থাকলেও মানা হচ্ছে না দূরত্ববিধি। ডিসিআরসির ভিতরে দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে তালিকার সঙ্গে ভোটের সরঞ্জাম মিলিয়ে দেখতে যত্রতত্র বসে গিয়েছেন ভোটকর্মীরা। কলেজের পিছনের মাঠে রয়েছে পুলিশকর্মীদের ভোটের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা। সেখানেও ভিড় ছিল, অনেকেরই মুখে মাস্ক ছিল না।

পূর্ব বর্ধমানে ডিসিআরসিগুলিতে ভোট-সামগ্রী সংগ্রহের জন্য জড়ো হন কর্মীরা। বেশিরভাগ কর্মী মাস্ক পরে এলেও দূরত্ব-বিধি ছিল শিকেয়। কাটোয়া সেচ দফতরের এক কর্মীর কথায়, ‘‘স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। ভোট করাতে এসে করোনা-আক্রান্ত হয়ে পড়ব কি না, সে নিয়ে চিন্তায় আছি।’’ জেলা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, দূরত্ববিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভোটকর্মীদের।

নদিয়ার কৃষ্ণনগরে সকাল খেকেই ডিসিআরসি-গুলিতে ভিড় করেন ভোটকর্মীরা। কোনও রকম করোনা বিধি মানা হয়নি। টেবিলগুলির সামনেও ঠেলাঠেলি ভিড়। অনেকেই মাস্ক থুতনিতে ঝুলিয়ে রেখেছেন। সকাল থেকেই রায়গঞ্জের পলিটেকনিক কলেজ ও ইসলামপুর কলেজের ভোটসামগ্রী বিতরণ ও গ্রহণ কেন্দ্রে ভোটকর্মীদের ভিড় উপচে পড়েছিল। বহু ভোটকর্মীকেই মাস্ক মুখের নিচে নামিয়ে রাখতে দেখা গিয়েছে। এদিন দুপুরে রায়গঞ্জের কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে পড়েন জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অরবিন্দকুমার মিনা। পরে তিনি বলেন, ‘‘যতটা সম্ভব কোভিড বিধি মেনে ভোটকর্মীদের ভোটসামগ্রী দেওয়া হয়েছে।’’

প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিতেও একই ছবি ধরা পড়েছে। কলকাতায় সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের শিবিরে ভিড় নিয়ে অনেক ভোটকর্মী উষ্মা প্রকাশ করেছেন। একই অভিযোগ উঠেছে বহরমপুরেও। কৃষ্ণনাথ কলেজে প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া প্রবীণ ভোটকর্মী শিক্ষক সুদীপ্ত চক্রবর্তী বলেন, “একটা ছ’ফুটেরও কম মাপের বেঞ্চে চার জন করে বসতে বাধ্য হয়েছিলাম।” সে কথা অস্বীকার করে এক আধিকারিক বলেন, “করোনার কথা মাথায় রেখে বড় বড় ঘরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলাম।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement