Sitalkuchi

Bengal Polls: ৪ নয় ৮ জনকে মারা উচিত ছিল, শীতলকুচি নিয়ে মন্তব্য রাহুলের, এঁরা দেশের নেতা? প্রশ্ন মমতার

শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে তোলপাড় বাংলার রাজনীতি। তৃণমূল-বিজেপি, দু’দলই একে অপরের ঘাড়ে দোষ ঠেলছে। প্রশ্ন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবড়া শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২১ ১৪:৪৬
Share:

হাবড়ায় রাহুল সিন্হা। —নিজস্ব চিত্র।

দিলীপ ঘোষের পর শীতলকুচি নিয়ে এ বার বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি নেতা রাহুল সিন্‌হার। তাঁর মতে, ৪ জন নয়, শীতলকুচিতে ৮ জনকে মেরে ফেলা উচিত ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে বলছে ৪ জনের জায়গায় ৮ জনকে মারা উচিত ছিল? এরা দেশের নেতা হবে?’’

Advertisement

শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে তোলপাড় বাংলার রাজনীতি। তৃণমূল-বিজেপি, দু’দলই একে অপরের ঘাড়ে দোষ ঠেলছে। সেই পরিস্থিতিতে রবিবার হাবড়ার চোংদা মোড় থেকে বাণীপুর পর্যন্ত অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে রোড শো করেন স্থানীয় বিজেপি প্রার্থী রাহুল। ওই রোড শো শেষে রাহুলের কাছে শীতলকুচির ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয়। তখন তিনি বলেন, ‘‘শীতলকুচিতে ৪ জনের বদলে ৮ জনকে মারা উচিত ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী ৪ জনকে মারল, তার জন্য বরং শো কজ করা উচিত তাদের।’’ শনিবার ভোটের দিন শীতলকুচিতে একটি বুথে ৮ জন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত ৪ জনকে উল্লেখ করেই রাহুল এমন মন্তব্য করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

শীতলকুচিতে শনিবার সকালে ১৮ বছরের আনন্দ বর্মণের মৃত্যু দিয়ে রক্তপাতের সূত্রপাত। ভোটের লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় গোলমাল শুরু হলে, পালাতে যায় সে। সেই সময় গুলি লেগে মৃত্যু হয় তার। আনন্দের পরিবারের দাবি, তারা বিজেপি-র সমর্থক। সে প্রসঙ্গ তুলে রাহুল বলেন, ‘‘বিজেপি করার অভিযোগে ভোটের লাইনে দাঁড়ানো ১৮ বছরের ছেলেক যারা গুলি করে মারে, তাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যারা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেখে বোমা ছোড়ে, মানুষকে ভোট দিতে দেয় না, তাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার দিন শেষ হয়ে গিয়েছে। আর কিছু করতে পারবেন না। মস্তানরাজ কায়েম করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার চেষ্টা করছেন। শীতুলকুচিতেও চেষ্টা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনী উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। আবার যদি করে, আবারও জবাব দেওয়া হবে।’’

Advertisement

এর আগে, বরাহনগরের প্রচার সভা থেকে একই মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপকে। ‘জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে’ বলে রবিবার সকালেই মন্তব্য করেন তিনি। তার পর তাঁরই উত্তরসূরি রাহুলের মন্তব্য সামনে আসার পর, নিন্দায় সরব হয়েছে তৃণমূল। সোমবার রানাঘাটের সভা থেকে খোদ দলনেত্রী এ নিয়ে মুখ খোলেন। রাহুলের নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘এই হল বিজেপি-র নেতা। গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে বলছে, ৪ জনের জায়গায় ৮ জনকে মারা উচিত ছিল! এরা দেশের নেতা হবে? এদের আপনারা ভোট দেবেন? আপনারা নিশ্চয়ই চান, আমরা শান্তিতে থাকি। গুলি করে যেন মানুষ মারতে না হয়। তাই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’

তবে মমতার আক্রমণ গায়ে মাখতে নারাজ রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি বলেন, ‘‘৪ জন মারা গিয়েছে, না ৮ জন মারা যেত, এ সব বড় কথা নয়। আমরা যেটা মনে করি এবং সেটাই সত্যি— শীতলকুচিতে যা হয়েছে, তার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে দায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উনি উস্কানি না দিলে কেউ অস্ত্র কাড়তে যেত না। গুলিও চালাত না কেন্দ্রীয় বাহিনী। কেন্দ্রীয় বাহিনী তাদের কাজ করেছে।’’

তবে যে আনন্দকে নিয়ে বিজেপি বার বার মমতাকে আক্রমণ করেছেন, তাকে নিয়েও রানাঘাটে মুখ খোলেন মমতা। অভিযোগ করেন, বিজেপি নিজেই তাদের কর্মীকে খুন করেছে। রাজবংশী ওই পরিবারকে তিনি সব রকম সাহায্য করবেন বলেও জানান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement