শ্রাবন্তী এবং বনি
এ বিড়ম্বনা খ্যাতির, এ বিড়ম্বনা রঙের। রাজনীতির দলবদলের খেলায় নাম লিখিয়েছেন ছোট-বড় অনেক নেতা। কিন্তু তাঁদের দিকে এমন বিদ্রুপের বাণ ধেয়ে আসছে না, যতটা সহ্য করতে হচ্ছে সেলেব্রিটিদের। গত বুধবার বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত। তার পর থেকেই ট্রোলড হচ্ছেন তিনি। বনির মা পিয়া সেনগুপ্ত তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য। প্রেমিকা কৌশানী মুখোপাধ্যায় শাসক দলের হয়ে এ বারের নির্বাচনে কৃষ্ণনগর (উত্তর) কেন্দ্র থেকে লড়বেন। এর আগে বনিকে তৃণমূলের মঞ্চে দেখা গিয়েছে। তাই অভিনেতার বিজেপি শিবিরে যোগের পিছনে ‘পাওনাগণ্ডা’র গন্ধ পাচ্ছেন অনেকে।
ট্রোলের জবাব অবশ্য নিজের মতো করে দিয়েছেন বনি। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পেজে নিন্দুকদের উদ্দেশে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘এটা আমার জীবন। আর আমি যেটা করতে চাই সেটাই করব। কঠোর পরিশ্রম করে নিজের খরচ চালাতে হয় আমাকে। কেউ বিনামূল্যে আমাকে খাওয়াবে না।’’ ট্রোলের সুবাদে হলেও, গোটা বিষয়টিতে প্রচার পেয়েছেন বনি। সেটাও তিনি তাঁর ইনস্টা-স্টোরিতে মনে করিয়ে দিয়েছেন। শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয় বনি ট্রোলড হয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেও। ঋদ্ধি সেন, শ্রীলেখা মিত্ররা যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় ধিক্কার জানিয়েছেন অভিনেতাকে। ইন্ডাস্ট্রির এক রাজনীতিমনস্ক অভিনেতা যেমন বললেন, ‘‘আমি আর কিছুতেই বিস্মিত হই না। রাজনীতিতে মতাদর্শের কোনও স্থান নেই এটা বেশ বুঝতে পারছি।’’ বনি নিজের সমর্থনে যে পোস্টটি করেছেন, তা নিয়েও নেতিবাচক মন্তব্য ভেসে আসছে। ‘বিজেপি-তে যোগ দিলে খরচ চালাতে সুবিধে হবে?’, ‘মানুষের জন্য কাজ, না কি নিজের খরচ তুলে নেওয়া?’ এ ধরনের মন্তব্যও রয়েছে সমাজমাধ্যমে।
বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকেই ট্রোলিং সামলাচ্ছেন শ্রাবন্তী। তাঁকেও এক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দেখা যেত। তবে শ্রাবন্তীকে যে ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণের মুখোমুখি হতে হয়েছে, তা নিয়ে সরব তৃণমূল শিবিরের অনেকেই। মিমি চক্রবর্তী, সুদেষ্ণা রায়েরা কুৎসা ছড়ানোর বিরোধিতা করেছেন। তবে ট্রোলিং থামেনি তাতে। বাধ্য হয়ে অভিনেত্রী তাঁর ইনস্টা-পেজের কমেন্ট সেকশন লিমিটেড করে দিয়েছেন। দলে যোগ দেওয়ার পর থেকে শ্রাবন্তী তাঁর ইনস্টাগ্রামে একটিও রাজনৈতিক পোস্ট করেননি। যদিও টুইটারে একাধিক তির্যক রাজনৈতিক পোস্ট করেছেন। তবে দু’টি প্ল্যাটফর্মেই অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে তাঁকে। শ্রাবন্তী নিজের সমর্থনে কোনও বক্তব্য পেশ করেননি। সাফ বলেছেন, ট্রোলিংকে গুরুত্ব দেন না তিনি।
সেলেব্রিটিরা বরাবরই ট্রোলের সহজ শিকার। নির্বাচনের মরসুমে তা আরও আক্রমণাত্মক, আরও ক্ষুরধার হয়েছে।