kasba

Bengal Polls : ফুল ফোটার ‘খেলা’য় বড় ভূমিকা বামেদের

এখানকার ভোটের সাম্প্রতিক হিসেবে জাভেদের এই দাবি নিয়ে খুব বেশি সংশয় হওয়ার কথা নয়।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১ ০৫:২২
Share:

জাভেদ খান, শতরূপ ঘোষ, ইন্দ্রনীল খান (বাঁদিক থেকে)।

লোকসভা ভোটে প্রায় ৩৫ হাজার ভোটে এগিয়ে। তবু বিধানসভা ভোটের আগে গুঞ্জন কেন কসবা কেন্দ্র নিয়ে? লোকসভা ভোটের সেই ব্যবধানকে মাপকাঠি ধরলে নিশ্চিন্তেই থাকার কথা তৃণমূলের। কিন্তু কতটা নিশ্চিন্তে আছেন দু’বারের বিধায়ক তথা মন্ত্রী জাভেদ খান?

Advertisement

জাভেদ বললেন, ‘‘একদম নিশ্চিন্ত।’’ দু’বারের বিধায়ক, রাজ্যে মন্ত্রী আর শক্তিশালী নেতা স্বাভাবিক ভাবে যোগ করলেন, ‘‘শুধু জিতব না। এ বার জিতব দ্বিগুণ ব্যবধানে।’’

এখানকার ভোটের সাম্প্রতিক হিসেবে জাভেদের এই দাবি নিয়ে খুব বেশি সংশয় হওয়ার কথা নয়। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে তিনি জিতেছিলেন প্রায় ১২ হাজার ভোটে। আর লোকসভা ভোটে কসবায় তৃণমূল এগিয়েছিল প্রায় ৩৫ হাজার ভোটে। সে দিক থেকে জাভেদের অবস্থানে বদল হয়নি। বরং তৃণমূলের বিরোধী শিবিরে বাম ও বিজেপির বিন্যাসে বদল হয়েছে। সে দিক থেকে এ বারে কসবার নির্বাচনে জিততে গেলে সিপিএম তথা সংযুক্ত মোর্চাকে হাওয়া যতটা নিজেদের দিকে ঘোরাতে হবে তা জাভেদের থেকে অনেক বেশি।

Advertisement

কসবা অঞ্চল একসময় সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি ছিল। সাংগঠনিক শক্তির সেই ছাপ এখনও রয়েছে এই বিধানসভার দু’টি ওয়ার্ডে। সেই সঙ্গে ২০১৬ সালে কসবায় দলের ছাত্রনেতা শতরূপ ঘোষকে প্রার্থী করে ফল পেয়েছিল বামেরা। কিন্তু গত তিন বছরে এখানকার বিরোধী ভোটের চেহারা একেবারে বদলে গিয়েছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে যে বিজেপি মাত্র সাড়ে ১৭ হাজার ভোট পেয়েছিল, তারাই গত লোকসভা নির্বাচনে ৬৩ হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে চলে এসেছে। এবং সহজ অঙ্কেই দেখা যাচ্ছে বামেদের ভোটই গিয়েছে বিজেপির দিকে।

এই যাওয়া আসায় কসবার ফল কি প্রভাবিত হতে পারে? বিজেপি কি বিরোধী ভোট আরও বেশি টানতে পারে তাদের দিকে? জীবনের প্রথম নির্বাচনে এই অঙ্কে খুব এখটা ঢুকতে চাইছেন না বিজেপির চিকিৎসক প্রার্থী ইন্দ্রনীল খান। তিনি বলেন, ‘‘অভিজ্ঞতা থেকেই এ বার তৃণমূলের বদলে বিজেপিকে বেছে নেবে মানুষ। নাগরিক পরিষেবা নেই। বেআইনি নির্মাণ, দাদাগিরি, সিন্ডিকেট আছে।


এ সবের সামনে কোনও অঙ্ক কাজ করবে না।’’ পরিষেবার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘প্রচারে দেখেছি, বহু জায়গায় আলো, জলের সমস্যা রয়েছে। বিদ্যুতের সুযোগ থেকেও মানুষ বঞ্চিত।’’

জাভেদের কথায়, ‘‘৩৪ বছরে সিপিএম জলের সমস্যা মেটাতে পারেনি। গত ১০ বছরে আমরা সে কাজ অনেকটাই করেছি। আমরা তার ৮০ শতাংশ মিটিয়ে ফেলতে পেরেছি।’’ সিন্ডিকেট বা বেআইনি নির্মাণ নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগে আমল দিতে চান না জাভেদ। তবে এ সব নিয়ে এলাকায় মারামারি, সংঘর্ষ হয়েছে। তৃণমূলের একাংশই এ নিয়ে দলের মধ্যে নানা সময়ে কথা তুলেছে।

জাভেদ যতটা বলছেন, কসবায় তৃণমূলের রাস্তা কি সত্যিই ততটা মসৃণ? কারণ স্থানীয় স্তরে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ঠেকাতে পদক্ষেপ করতে হয়েছে রাজ্য নেতৃত্বকেও। এই বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দু’টি ওয়ার্ডের নির্বাচিত দুই কাউন্সিলরের সঙ্গে জাভেদের সম্পর্ক ভাল নয়। তাঁদের এক জন সুশান্ত ঘোষকে নন্দীগ্রামে ভোটের কাজে পাঠিয়ে এই বিরোধ সামাল দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তা নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে দলের অন্দরে। জাভেদ অবশ্য বলছেন, ‘‘সে সব সমস্যা হবে না।’’

এ বারের নিজের জয় নিশ্চিত করতে জাভেদও চাইছেন, নিজেদের ভোট ঘরে ফেরাক সিপিএম। লোকসভায় বিজেপির যে ভোট বেড়েছে তা বামেদের কাছে ফিরে গেলে তিনি নিশ্চিন্তই থাকবেন, সে কথা স্বীকারও করলেন।

সিপিএমও চাইছে নিজেদের ভোট ফেরাতে এবং অবশ্যই এই কেন্দ্রে শতরূপের জয় নিশ্চিত করতে। কসবায় প্রচারে এসে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র তাঁর প্রত্যাশার কথা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, শতরূপদের প্রজন্মকে প্রার্থী করার পিছনে তাঁদের প্রত্যাশা কী। সিপিএম প্রার্থী শতরূপের কথায়, ‘‘এ বার কসবায় আমরা জিতছি। ২০১৬ সালের নির্বাচনে একটি ওয়ার্ডে গায়ের জোর আর ধর্মকে ব্যবহার করে জিতেছিল তৃণমূল। কোথাও ছাপ্পা দিতে দেব না।’’ এ বার সংযুক্ত মোর্চার শরিক আইএসএফ-এর আব্বাস সিদ্দিকীর সভা সেই খামতি দূর করবে বলে আশা করছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement