তোড়জোড়: বিভিন্ন বিধানসভা এলাকার ফ্লেক্স লাগানো হচ্ছে সিউড়ি ডিসিআরসিতে। নিজস্ব চিত্র।
প্রচার পর্ব শেষ হয়েছে। কিন্তু প্রার্থীদের ব্যস্ততা এখনও কমে নি। ভোট নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা, পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলা এই করেই সারাদিন কাটালেন জেলার ১১টি আসনের নানা দলের প্রার্থীরা।
সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিকাশ রায়চৌধুরী সকাল থেকেই দলীয় কার্যালয়ে কর্মীদের সঙ্গে ভোট নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাছাড়া যাঁরা পোলিং এজেন্ট হবেন তাঁদের সঙ্গে ভোট নিয়ে কথা বলেছেন। বিকাশের কথায়, ‘‘কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। পাশাপাশি করোনা নিয়ে সমস্যায় থাকা প্রচুর মানুষের ফোন আসছে। তাঁদেরকে নানাভাবে সহায়তা করছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি প্যারাসুটে নামা নেতা নই। আমি তৃণমূল স্তরের নেতা।’’ অন্যদিকে, সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ও কর্মীদের সঙ্গে দিনভর ব্যস্ত ছিলেন। এ দিন সকাল থেকেই তিনি তাঁর পোলিং এজেন্ট, বুথ স্তরের কর্মীদের সঙ্গে নানান আলোচনা পর্ব সারেন। মূলত ভোটের দিন পোলিং এজেন্টদের কী কী করণীয়, কোথাও কোনও সমস্যা হলে বুথ স্তরের কর্মীরা কী করবেন সেই নিয়েই আলোচনা করেন। একই রকম ভাবে প্রায় সারাদিনই কর্মীদের নিয়ে মিটিং করেছেন সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী চঞ্চল চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘সকাল থেকে আমার একটা মিটিং ছিল সেটা করেছি। তারপর একটা অভিযোগ নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করেছি। তারপর প্রায় সারাদিনই আমাদের দলীয় মিটিং ছিল।’’
সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের মতো রামপুরহাট বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থীরাও চরম ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে সারা দিন কাটিয়েছেন। যেমন, ওই বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কার্যালয়ে এ দিন সকাল থেকে বুথ কমিটির সদস্যদের নিয়ে এবং পোলিং এজেন্টদের নিয়ে বৈঠক করেন। এ ছাড়া দূরবর্তী এলাকার বুথ কর্মী ও পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে ফোন মারফত কথাও বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এখন তো বেরোনো যাবে না। তাই পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলে ভোটের দিন কী কী করণীয় তা ঠিক করছি।’’ একই রকম ভাবে ওই বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শুভাশিস চৌধুরী জানান যে, তিনি বাড়িতেই বসে পোলিং এজেন্ট এবং বুথ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ফোনে ফোনে কথা বলেন। তাছাড়া সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী সঞ্জীব বর্মণ রামপুরহাটের দলীয় কার্যালয়ে গ্রামাঞ্চলের বুথ কর্মী সঙ্গে একটি আলোচনা পর্ব সারেন এবং কারা কারা পোলিং এজেন্ট হবেন তা ঠিক করেন। তাছাড়া বিকেল দিকে তিনি রামপুরহাট শহরের বুথ স্তরের কর্মীদের সঙ্গে একটি মিটিংও করেন।
বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী, বিদায়ী মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এ দিন সকাল থেকে ফোন মারফত তৃণমূল স্তরের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাছাড়া কর্মীদের সঙ্গে একাধিক ঘরোয়া বৈঠক সারেন। তাঁর কথায়, ‘‘কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, ভোটের দিন কার কী করণীয় এই সমস্ত আলোচনার মধ্য দিয়েই সারাদিন কাটিয়েছি।’’ অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, যেহেতু তিনদিন আর প্রচার করা যাবে না। তাই সাংগঠনিক বৈঠক করা হয়েছে। তাছাড়া দূরের এলাকার কর্মীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। মন্দিরে পূজো দেওয়ারও পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর। বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্ররের তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলের প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলা গেলেও সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী তপন হোড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। তবে, দলীয় সূত্রে খবর, তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
অধিকাংশ প্রার্থীরাই ভোট নিয়ে নানান বৈঠক, কর্মীদের সঙ্গে আলোচনার মধ্যে দিয়ে দিন শুরু করলেও হাঁসন বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী চিকিৎসক অশোক চট্টোপাধ্যায় সকালে প্রথমে নিজের কাজ সেরেছেন। এ দিন সকালে তিনি তাঁর নার্সিং হোমে দুটি অপারেশন করেন। তারপর তিনি কর্মী ও পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে আলোচনা পর্ব সারেন। ওই বিধানসভা কেন্দ্রের সংযুক্ত মোর্চার সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মিল্টন রশিদ সারাদিনই বাড়িতেই কাটিয়েছেন। আর ফোনে ফোনে নিজের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ফোনে ফোনে যোগাযোগ করছি। আর প্রার্থনা করছি যাতে মানুষ ভেবেচিন্তে যেন ভোটটা দেন।’’