ঘটনাস্থল। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগকে ঘিরে শুক্রবার দুপুরে তেতে উঠল বাঁকুড়ার জয়পুরের মুরলীগঞ্জ। সেই ঘটনায় আহত পাঁচ জনকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এক বালক-সহ চার সিপিএম কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সিপিএমের লোকজনই তাদের পার্টি অফিসে বোমাবাজি করেছে। যদিও বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। পার্টি অফিস লাগোয়া একটি পুকুর থেকেও কিছু দেশি বোমা উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই পার্টি অফিসেই বোমা রাখা ছিল। কোনও ভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, দুপুর আড়াইটে নাগাদ মুরলীগঞ্জে তৃণমূলের পার্টি অফিসে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরে শুনি সেখানে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটেছে। আহতদের কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরই মধ্যে খবর আসে, হাতবাড়িতে সিপিএমের লোকেদের উপরে তৃণমূলের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। তাঁদের চার জনকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত শেখ জুলফিকার আলি, তাঁর ১২ বছরের ছেলে রাজেশ শেখ, কুরবান আলি শেখের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা বোমা বাঁধতে গিয়ে আহত হয়েছে। আমরা সিপিএম করি বলে সামনে পেয়ে ওরা লাঠি নিয়ে পেটায়।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতির দাবি, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা নিজেদের বোমায় আহত হয়ে, লোকজনের নজর ঘোরাতে আমাদের কর্মীদের মারধর করল।’’
অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরার দাবি, ‘‘উত্তরবাড় আমাদের শক্ত ঘাঁটি। উত্তেজনা ছড়াতেই বিজেপি, সিপিএম এক হয়ে আমাদের পার্টি অফিসে বোমাবাজি করেছে। কাউকে মারধর করা হয়নি।’’ বোমায় আহত হয়েছেন মোরশেদ আলি খান, ইয়ামত আলি ভুঁইয়া, ইয়াজুল মোল্লা, ইনাতুল্লা ভুঁইয়া, সফিকুল পাঠান। আরামবাগ হাসপাতালে আহতদের সঙ্গী জব্বার আলি খান দাবি করেন, ‘‘ওঁরা তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে বসেছিলেন। হঠাৎ সিপিএমের লোকজন এসে বোমাবাজি করে পালায়।” উত্তরবাড় অঞ্চলের তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান দিলীপ ঘোষের উপরেও হামলার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। যদিও জয়পুরের সিপিএম নেতা ষড়ানন পান্ডের দাবি, ‘‘কাল্পনিক অভিযোগ।’’ বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তির দাবি, ‘‘সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে গোলমাল বলে শুনেছি। বিজেপিকে অযথা জড়ানো হচ্ছে।’’