কোচবিহারের জনসভায় শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে কোচবিহারে জনসভা করলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী নিখিলরঞ্জন দেকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার চান্দামারী নতুন বাজার এলাকায় জনসভা করেন তিনি।
সভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার গ্যাসের দামের ৩৬ শতাংশ ভ্যাট নেয়। আমরা ক্ষমতায় এলে ভ্যাট অনেক কমিয়ে দেব। বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি এখন ৯ টাকা নেয় রাজ্য সরকার। ক্ষমতায় এলে আমরা ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিনামূল্যে দেব।’’
বুধবার কোচবিহারের শীতলকুচিতে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপর হামলার প্রসঙ্গও তাঁর বক্তৃতায় এসেছে। পাশাপাশি, নন্দীগ্রাম বিধানসভায় তিনি তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিপুল ভোটে হারাবেন বলেও দাবি করেন শুভেন্দু। কোচবিহারবাসীর উদ্দেশে তাঁর আহ্বান, ‘‘উৎসবের মত করে ভোট দিন। নন্দীগ্রামে আমি ছক্কা মেরে এসেছি। এখানে কিছু মস্তান বেরিয়েছে। বোমা ফাটিয়েছে। শীতলকুচির ১৬টি মস্তান ভেতরে ঢুকে গিয়েছে। বাকিরা রাতে ঢুকে যাবে। দিদির পুলিশ আর থাকবে না। দাদার পুলিশ এর পর লাঠি দিয়ে প্যাঁদাবে।’’
ছত্রধর মাহাতোর প্রসঙ্গে মমতাকে নিশানা করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মাননীয়া খুনিদের এক করেছেন। এই ছত্রধর মাহাতো যিনি জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ডের অভিযুক্ত, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক। যে বিমল গুরুংয়ের জন্য গোটা পাহাড় রক্তাক্ত হল, একজন পুলিশ অফিসার খুন হলেনস সেই বিমল এখন পুলিশের নিরাপত্তা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই জঙ্গলের রাজত্বকে বদলাতে হবে। আমরা বদলে দিয়েছি। নন্দীগ্রামে বেগমকে হারিয়ে দিয়েছি।’’
মমতাকে নির্বাচন কমিশনের নোটিস পাঠানোর প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দুর দাবি, প্রথম তিন দফায় মানুষ বাড়ি থেকে বের হয়ে যেভাবে লাইন দিয়ে ভোট দিয়েছেন তাতে তৃণমূল নেত্রীর ‘মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে’। তাঁর কথায়, ‘‘তাই মাননীয়া এখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলছেন, পাড়ার ঝগড়ুটে মেয়েদের পোলিং এজেন্ট বানাও। মহিলারা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করে রাখো। বুথে বুথে গিয়ে ভোট লুট করো। আবার কোথাও গিয়ে তিনি বলছেন আমার মুসলিম ভাইয়েরা তোমরা ভোট ভাগ করো না। তোমরা একসঙ্গে ভোট দিয়ে আমাকে ভোটে জেতাও। পশ্চিমবঙ্গ হচ্ছে বাংলাদেশ সীমান্ত, নেপাল-ভুটান সীমান্ত। এই রাজ্যকে মাননীয়া আরেকটি বাংলাদেশ বানাতে চান। আমাদের উদ্বাস্তু করতে চান। কারণ কয়েক মাস আগেই তিনি বলেছেন, ভারতবর্ষে একটি রাজধানী কেন চারটি রাজধানী হওয়া উচিত।
নাটাবাড়ির তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে দুষে শুভেন্দু বলেন, ‘‘তোলাবাজ ভাইপোর ছোট ভাই রবি ঘোষ, অসম থেকে গুন্ডা নিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। কয়লার যত গাড়ি যায় সেই গাড়ি থেকে টাকা তুলে ভাইপোকে পাঠিয়েছে।’’
রবীন্দ্রনাথ জবাবে বলেন, ‘‘এখনও নন্দীগ্রামের ফলাফল ঘোষণা হল না আর নিজেকে জয়ী হিসেবে ঘোষণা করে দিলেন! দিনের বেলা ভুল স্বপ্ন দেখছেন শুভেন্দু। ভোটে আমরা সন্ত্রাস করি না। কারণ ভোট শান্তিপূর্ণ হলে আমাদেরই লাভ। জনগণ আমাদেরই ভোট দেবে।’’