প্রতীকী ছবি।
জেলায় কী এবারে খাতা খুলতে পারবে বিজেপি?
৬৫ শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদে পাঁচ পাঁচ জন সংখ্যালঘু প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। রাজ্য জুড়ে যখন বিজেপির সঙ্গে কাঁটার টক্কর চলছে তৃণমূলের, ঠিক তখনই এ জেলার ২১টি আসনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত কটি আসনে দাগ কাটতে পারবে বিজেপি, এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ সেটাই। বিজেপিরই একটি অংশে তা নিয়ে দ্বিধা কাটছে না।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২০ থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত ভোট পেয়েছিল বিজেপি মাত্র ৪টি কেন্দ্র যথা বেলডাঙা, মুর্শিদাবাদ, জঙ্গিপুর এবং নওদায়। ২০১১ সালে ২০ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছিল শুধু ফরাক্কা আসনে (২৬৬৯৬ ভোট)।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জেলায় ৭টি আসনে এক ধাক্কায় ভোট বাড়িয়ে নিয়েছিল অনেকটাই। ৪০ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেছিল সে গুলিতে। সবচেয়ে বড় চমক ছিল মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে। প্রায় ৮১ হাজার ভোট পেয়ে সব দলকে পিছনে ফেলে এগিয়ে ছিল বিজেপি। ৬৬ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে নজর কেড়েছিল জঙ্গিপুর। ৫১ হাজার ভোট পেয়ে চমক দেখিয়েছিল সুতি ও নবগ্রামেও।
কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কী পারবে তাদের এই ভোটব্যাঙ্ক ধরে রেখে খাতা খুলতে, জেলা রাজনীতিতে লাখ টাকার প্রশ্ন এখন সেটাই। যদিও তৃণমূল ও কংগ্রেস এ জেলায় ভোটে বিজেপিকে সে ভাবে গুরুত্ব দিতে রাজি নন।
বিজেপির পক্ষ থেকে জেলায় অন্তত ৯টি আসনকে পাখির চোখ করা হয়েছে এ বারে। তাদের রাজনৈতিক হিসেবে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে সেটাও উপেক্ষার নয়।
২০১৯ সালের লোকসভা এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ফারাক বিস্তর। ২০১৯য়ের নির্বাচনে প্রায় ২২টির মধ্যে ১৭টিতে এগিয়ে ছিল একচ্ছত্র ভাবে তৃণমূল। ৪টিতে কংগ্রেস। ১টিতে বিজেপি। এবারের নির্বাচনে তৃণমূলের দাপট যেমন কমেছে,শক্তি কিছুটা হলেও বেড়েছে কংগ্রেসের। পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএম। সেই অঙ্কে ভোট ভাগ হবে তাদের মধ্যে। তুলনায় বিজেপির ভোট অক্ষত থাকবে তাই নয়, রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাদের ভোট বাড়বে বলেই মনে করছে বিজেপি।
বিজেপির নবদ্বীপ জোনের অধীনে রয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার ২২টি আসন। জোনের কোঅর্ডিনেটর শাখারভ সরকার বলেছেন, “জেলায় ৩টি আসনে সংখ্যালঘু ভোট কম। বহরমপুর, বড়ঞা ও মুর্শিদাবাদ। বহরমপুর ও ফরাক্কায় এবার ভাল ফল হবে বিজেপির। জেলায় অন্তত ৯টি আসনের দিকে লক্ষ্য রয়েছে আমাদের। তার মধ্যে রয়েছে সাগরদিঘিও, যেখানে দলের প্রার্থী মাফুজা খাতুন।”
মাফুজা রাজ্যের সহ সভাপতি। উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু মুখ শুধু নয়, জিতলেই দল যে তাকে মন্ত্রিসভায় আনবে সেটাও জানে বিজেপির কর্মীরা।
গত লোকসভায় প্রার্থী হিসেবে সাগরদিঘিতে প্রায় ৪২ হাজার ভোট পেয়েছিলেন তিনি। কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় পেয়েছিলেন প্রায় ৪০ হাজার ভোট। বিজেপির হিসেবে “অভিজিতের ভোটের একটি বড় অংশ এ বারে আসবে মাফুজার দিকে।”
সুতির প্রার্থী কৌশিক দাসের হিসেবে, প্রায় ৯৩ হাজার ভোট রয়েছে সুতিতে যার সিংহভাগই পাবে বিজেপি। তুলনায় কংগ্রেস ও তৃণমূলের ভোটে ভাগ বসাবে তাদেরই বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থী। তাই জয় নিশ্চিত তার।”
বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ জেলার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন কো-অর্ডিনেটর সোমেন মণ্ডল। বলছেন, “জেলার দক্ষিণ অংশে ১৩টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে মুর্শিদাবাদ, বহরমপুর, কান্দি, ভরতপুর, নওদা, বেলডাঙা এবং জলঙ্গিতে ভাল ফল হবে বলে শুধু আশাবাদীই নই, ৫টি আসন অবশ্যই পাচ্ছি এবারে।”