রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।
প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে নিয়ে সিঙ্গুরে বিজেপির অন্দরের টানাপড়েন মিটল।
রবিবার রাতে রবীন্দ্রনাথবাবু সিঙ্গুরের বুড়োশান্তি মাঠের কাছে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে ‘বিদ্রোহী’ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তারপরেই জট কাটে বলে তাঁর দাবি। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘এতদিন যা হয়েছে তা অতীত। সোমবার থেকেই আমরা সকলে একযোগে প্রচারে নামছি। আমরা সিঙ্গুরে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করে বিজেপিকে জিতিয়ে আনব।’’
‘বিদ্রোহী’দের পক্ষে সিঙ্গুরের বিজেপি আহ্বায়ক সৌরেন পাত্র বলেন, সাময়িক একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে বসে সব মিটে গিয়েছে।’’ বিজেপির জেলা (সদর) সাংগঠনিক সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সৌরেনবাবুকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম সব পক্ষের সঙ্গে বসে সমঝোতা করতে। মাস্টারমশাইও ছিলেন। সোমবার সব পক্ষকে নিয়ে মিছিল করে চন্দননগরে মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন রবীন্দ্রনাথবাবু।’’
প্রার্থী-তালিকা ঘোষণা হওয়া ইস্তক হুগলির এই কেন্দ্রে বিজেপি নেতাদের একাংশ ‘বিদ্রোহ’ করেন। তৃণমূল-ত্যাগী রবীন্দ্রনাথবাবুকে তাঁরা মানতে চাননি। বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। আপত্তির কথা তাঁরা লিখিত ভাবে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন। প্রার্থী বদলের দাবিও তুলেছিলেন। কিন্তু তাঁদের সেই দাবি মানা হয়নি।
আপত্তি গ্রাহ্য না-হওয়ায় গত বৃহ্স্পতিবার থেকে বুড়োশান্তি মাঠে মঞ্চ বেঁধে অনশন শুরু করেন ‘বিদ্রোহী’ নেতারা। তাঁরা রবীন্দ্রনাথবাবুর কাছে গিয়েও তাঁকে সরে দাঁড়াতে আর্জি জানিয়েছিলেন। সিঙ্গুরের বাসিন্দা তথা দলের জেলা স্তরের নেতা সঞ্জয় পাণ্ডের বাড়িতে ভাঙচুর-লুটপাটেরও অভিযোগ ওঠে ‘বিদ্রোহী’ আট জনের বিরুদ্ধে। নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন বিজেপির মণ্ডল সহ-সভাপতি গৌতম মোদক। তাঁর নামে দেওয়াল-লিখন শুরু হয়ে যায় রবিবার থেকে। রাতে অবশ্য ছবিটা পাল্টে যায়। রবীন্দ্রনাথবাবু নিজেই দলীয় কার্যালয়ে যান ‘বিদ্রোহী’ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করতে।
এই জেলার অন্য দুই কেন্দ্রে অবশ্য এখনও জট কাটেনি। তারকেশ্বরে ‘নির্দল’ প্রার্থী হয়েছেন বিজেপি নেতা সুকুমার খাঁড়া। বিজেপির প্রার্থী-তালিকা প্রকাশের পরে উত্তরপাড়া কেন্দ্রে প্রথম ‘নির্দল’ হয়ে দাঁড়ান দলের প্রাক্তন জেলা সভানেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্য। কৃষ্ণাদেবী বলেন, ‘‘আমরা বহু কষ্ট, ত্যাগ স্বীকার করে দলকে এই জায়গায় এনেছি। আর সদ্য দলে যোগ দেওয়া একজনকে টিকিট দেওয়া হল?’’ সুকুমারবাবু বিজেপির টিকিটে ১৯৯৬ সালে তারকেশ্বর থেকেই লড়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা সংগঠন করে আসছেন, তাঁদের সম্মান দেয়নি বিজেপি।’’
তারকেশ্বর নিয়ে অবশ্য দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি গণেশ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝি মেটানোর চেষ্টা করা হবে।’’