সাইকেলে প্রচার। নিজস্ব চিত্র।
সাইকেলের প্যাডেলে পায়ের চাপ, গলায় ঝোলানো মাইকে বিজেপি’র হয়ে হাঁক— ভোটের প্রচারে একাই ছুটছেন বিজেপি নেতা সৌমিত্র সেতুয়া!
ভোটের বাজারে যখন রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারে ভরসা গাড়ি-জনসভা, তখন পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভার আনাচে-কানাচে ওই কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সিন্টু সেনাপতির হয়ে একাই প্রচার চলাচ্ছেন সৌমিত্র। বিজেপির পাঁশকুড়া-১ কেশাপাট মণ্ডলের এই সাধারণ সম্পাদকের প্রচারের ভরসা সাইকেল ট্যাবলো। তাতে করেই তিনি পাঁশকুড়া পশ্চিমের বিধানসভা এলাকার ২৯৯টি বুথের মধ্যে প্রায় ২০০টি বুথে প্রচার সেরে ফেলেছেন। ভোটের আগে বাকি বুথগুলিতেও করবেন প্রচার।
বছর সাঁইত্রিশের সৌমিত্রের কেশাপাট বাজার এলাকায় ব্যবসা করতেন। ২০১৪ সালে বিজেপিতে যোগ দেন। দলের সর্বক্ষণের কর্মী হিসাবে কাজ করার জন্য ২০১৫ সালে বন্ধ করে দেন ব্যবসা। এবার বিধানসভা ভোট ঘোষণা হওয়ার পর নিজের সাইকেলে দলীয় নেতাদের ছবি ও পতাকা দিয়ে ট্যাবলো বানিয়েছেন সৌমিত্র। কলকাতায় থেকে কিনে এনেছেন একটি পোর্টেবল মাইক সেট। গলায় সেই মাইক ঝুলিয়ে ট্যাবলো- সাইকেলে পাড়ায় পাড়ায়, বাজার ঘাটে, সৌমিত্রর ভোট প্রচার চলছে। প্রচারের ফাঁকে ফাঁকে পাড়া বৈঠক, ইভিএমের মাধ্যমে ভোটারদের ভোটদান প্রক্রিয়াও বোঝাচ্ছেন।
সৌমিত্র জানাচ্ছেন, সকালে পুজোপাঠ সেরে হাতিশালে দলীয় কার্যালয়ে চা-বিস্কুট খেয়ে ৯টায় বেরিয়ে পড়েন। ব্যাগে থাকে জল আর বিস্কুট। অধিকাংশ দিনই বাড়ি ফেরেন গভীর রাতে। গান, বাজনা, আঁকাতেও দক্ষতা রয়েছে সৌমিত্রের। তাঁর লেখা স্লোগান এলাকার নেতারা জনসভা ব্যবহার করছেন। চলছে দেওয়াল লিখনও। সৌমিত্রর কথায়, ‘‘সমাজের জন্য কিছু করতে চেওয়ার তাগিদা থেকে রাজনীতিতে আমার আসা। আমি কারও কাছ থেকে কিছু আশা করি না। তাই একাই প্রচার চালাচ্ছি। প্রথমে বিরোধীদের কাছে বাধা পেয়েছি। কিন্তু দমে যাইনি।’’
সৌমিত্রর স্ত্রী স্মিতা নার্স। স্ত্রীর কর্মস্থলে তাঁর সঙ্গে থাকে সেতুয়া দম্পতির বছর পাঁচেকের মেয়ে। রাজনীতিতে স্ত্রীই তাঁর প্রধান প্রেরণা বলে জানাচ্ছেন সৌমিত্র। দলের প্রতি সৌমিত্রর নিষ্ঠা প্রসঙ্গে পাঁশকুড়া পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী সিন্টু সেনাপতি বলেন, ‘‘সৌমিত্রদার মতো একনিষ্ঠ কর্মী দলের সম্পদ। আমার ভোট প্রচারের সিংহভাগ দায়িত্ব স্বেছায় কাঁধে তুলে নিয়েছেন উনি। উনি আমাদের সব্যসাচী।’’ প্রার্থী যখন এই প্রশংসা করছেন, তখন সেই ‘সব্যসাচী’র সাইকেলের চাকা ঘুরছে।