West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: এতদিনে টালির চালে বসেছে অ্যাসবেসটস

অনেকেই মনে করেন, পেশাদার রাজনীতিতে এখন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ পাওয়া দুষ্কর। বিশেষ করে যাঁরা কোনও পদে বা ক্ষমতায় থেকেছেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

হরিপাল শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২১ ০৬:১৭
Share:

হরিপালে প্রচারে বেরিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী সমীরণ মিত্র। ছবি: দীপঙ্কর দে।

অনেকেই মনে করেন, পেশাদার রাজনীতিতে এখন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ পাওয়া দুষ্কর। বিশেষ করে যাঁরা কোনও পদে বা ক্ষমতায় থেকেছেন। অথচ, দুই জেলায় এমন কয়েকজন রাজনীতিক তথা প্রার্থী আছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে বিরোধীরাও ব্যক্তিগত স্তরে আঙুল তোলেন না। রইল তেমনই কয়েকজনের কথা। আজ, হরিপালের বিজেপি প্রার্থী সমীরণ মিত্র।

Advertisement

তাঁর বিরুদ্ধে কখনও কোনও অভিযোগ?

Advertisement

মনে করতে পারছেন না হরিপালবাসী। এখানকার বিজেপি প্রার্থী সমীরণ মিত্রের ভাবমূর্তি নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলার সাহস পান না।

বছর খানেক আগে বাড়ি সংস্কার করেছেন। টালি বদলে চাল হয়েছে অ্যাসবেসটসের। সহদেব পঞ্চায়েতের কালুবাটী গ্রামে তাঁর ঘরের চেহারা অতি সাধারণ। শাসক দলের ছোটবড় মাপের বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে যখন অভিযোগের ফোয়ারা ছোটে, তখন তাঁর গায়ে কলঙ্কের ছিটেফোঁটা নেই।

এই সে দিন সরাসরি কালীঘাট থেকে ফোন এসেছিল হুগলি জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ সমীরণের কাছে। তাঁর তৎকালীন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রীতিমতো বিচলিত বোধ করেছিলেন সমীরণ দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন শুনে। বলেছিলেন, ‘‘অন্য কোনও সিদ্ধান্ত নিস না।’’ কিন্তু জীবনে এই প্রথম দলনেত্রীর কথা রাখতে পারেননি সমীরণ। সে কথা তাঁকে সরাসরি জানিয়ে দিতেও ভুল করেননি সোজাসাপটা মানুষটি।

বছর পঁয়ষট্টির অকৃতদার সমীরণবাবু সেই ১৯৭৮ সাল থেকে থেকে রাজনীতির ময়দানে রয়েছেন। ইন্দিরা কংগ্রেস থেকেই তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি। বরাবর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে অনুপ্রাণিত করে এসেছেন। তাই মমতা যখন কংগ্রেস ছেড়ে নতুন দল গড়ার সিদ্ধান্ত নেন, সমীরণও একটি বারের জন্যেও পিছনে ফিরে তাকাননি। তবে, দল রাজ্যে সরকার গঠনের পরে এই তালুকে তৃণমূলের কিছু নেতার কাজেকর্মে দলের প্রতি তাঁর মোহভঙ্গ হয়। তাই শুভেন্দু অধিকারী তাঁকে দল ছাড়ার প্রস্তাব দিতেই সম্মত হয়ে যান হরিপাল গুরুদয়াল স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সমীরণ।

তৃণমূল-ত্যাগী এই বিজেপি প্রার্থীর কথায়, ‘‘দুর্নীতি মানতে বা তাতে আমি কিছুতেই জড়াতে পারিনি। আমার পুরনো দলের কিছু মানুষের তাই হয়তো আমাকে নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। কারও পথের কাঁটা হয়ে চাইনি।’’

দীর্ঘদিন যে দলের হয়ে মাইক ধরেছিলেন হাটেবাজারে, এ বার সেই দলেরই প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে তিনি যুদ্ধে অবতীর্ণ। সমীরণের কথায়, ‘‘রাজনীতি করার কারণই দিনের শেষে মানুষের হয়ে যাতে কিছু কাজ করা যায়। আমার পুরনো দলে যেটা কঠিন হয়ে পড়ছিল। তাই এই অবস্থান বদল। তবে আমি কারও সম্পর্কে কোনও কুকথা বা মন্তব্য করতে পারব না।’’

এটাই আসলে সমীরণবাবুর ‘টিআরপি’। ভোটের ময়দানে তিনি জিতবেন কিনা, সময়ই বলবে। কিন্তু মানুষ হিসেবে তিনি জিতে ফেলেছেন এলাকাবাসীর মন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement