মিছিলে বাধা পুলিশের। বুধবার ধূপগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র।
হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা না মেনে ধূপগুড়িতে বাইক মিছিল করার অভিযোগ উঠল বিজেপি-র বিরুদ্ধে। পুলিশ সেই মিছিলে বাধা দিতে গেলে, তাদের একরকম ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বিজেপি-র বাইক বাহিনী মিছিল নিয়ে এগিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেছে। পাশাপাশি, বিজেপি-র বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমুল এবং সিপিএম। যদিও বিজেপি জানিয়েছে, তারা কোনও মিছিল করেনি। এলাকার মানুষই স্বতস্ফূর্ত ভাবে তাদের প্রার্থীর প্রচারে যোগ দিয়েছিলেন। দলের তরফে কাউকে বাইক নিয়ে আসতে বলা হয়নি।
বুধবার ঘটনাটি ঘটে ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী বিষ্ণুপদ রায়ের প্রচার সভায়। শনিবার, ১৭ এপ্রিল ভোট জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে। তার আগে বুধবার শেষলগ্নের প্রচারে বেরিয়েছিলেন বিষ্ণুপদ। পুলিশ জানিয়েছে, প্রার্থী হুডখোলা জিপে থাকলেও তাঁর জিপের পিছনে ছিল কয়েকশো বাইকারোহীর এক বিরাট মিছিল। তাদের বাধা দিতে গেলে পুলিশকে উপেক্ষা করে পুলিশকর্মীদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যায় বিজেপি-র বাইক বাহিনী। এই ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করেছে। ঘটনার নিন্দা করে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল এবং সিপিএমও।
নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন যে বাইক মিছিল করা যাবে না, তা জানিয়ে আগেই নির্দেশিকা জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশিকার পরও ধূপগুড়িতে বিজেপি বাইক মিছিল করল কী ভাবে, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে দুই রাজনৈতিক দল। এ ব্যাপারে কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
জলপাইগুড়ির তৃণমূল জেলা সম্পাদক রাজেশ কুমার সিংহের কথায়, ‘‘বিজেপি-র বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন ধৃতরাষ্ট্রর মতো ভূমিকা পালন করছে। শহরে শতাধিক বাইক নিয়ে মিছিল করল বিজেপি। শহর দাপিয়ে বেড়াল তাদের বাইক বাহিনী। অথচ এরপরও কমিশন চুপ। আমরা বিষয়টি নিয়ে তাই কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’
ধূপগুড়ির সিপিএম নেতা কৌশিক দাম বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে নির্বাচন চলাকালীন কোনও বাইক মিছিল করা যাবে না। তারপরও বিজেপি-র বাইক বাহিনী শহরে দাপিয়ে বেড়াল।কী ভাবে?’’ কৌশিকের দাবি, মানুষকে ভয় দেখানোর জন্যই বাইক নিয়ে এভাবে মিছিল করেছে বিজেপি। ঘটনার নিন্দা করেই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরাও। কৌশিক বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। অভিযোগ পেয়েও তারা কোনও পদক্ষেপ করেনি।’’
জলপাইগুড়ির বিজেপি নেতা আগুন রায় অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা বাইক নিয়ে মিছিল করিনি, সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে।’’