বিকোচ্ছে আবির। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র
সামনে দোল। তার পরে ভোট ও ভোটের ফল প্রকাশ। দুই ঘটনাকে মাথায় রেখে রং মজুত করছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের আশা করোনার কারণে গত বছরের বাজার না জমলেও এ বারের তাঁরা লাভের মুখ দেখতে পারেন।
তাই বস্তা থেকে গেরুয়া আর সবুজ আবির ছোট প্যাকেটে ভরতে ভরতে কৃষ্ণনগরের গোয়ারি বাজারের সোমনাথ দে একগাল হেসে বলে ওঠেন, ‘‘খেলা হবে। ভয়ঙ্কর আবির খেলা হবে।’’
সোমনাথ জানান, গত বছর দোলের সময় করোনা আবহে আবিরের বাজার সে ভাবে জমেনি। এ বছর পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় বাজার ভাল। তার ওপর দোলের কয়েক দিন পরেই ভোট ও ভোটের ফলপ্রকাশ। গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে যাবে বলেই আশা করা যায়।’’ ভোটের বাজারে যাতে আবিরে টান না পড়ে তাই এখন থেকেই পঞ্চাশ বস্তা মতো গেরুয়া আর সবুজ আবির মজুত করে রেখেছেন সোমনাথ।
আবির কারবারিদের একাংশ জানান, সবুজ বা লাল আবির তো ছিলই, কল্যাণী থেকে করিমপুর জেলার প্রায় সর্বত্রই এ বার গেরুয়া আবিরের চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে। আর সে কারণেই দোকানিরা দোলের জন্য বিভিন্ন রঙের আবির মজুত করলেও সবুজ ও গেরুয়া আবির বেশি পরিমাণ মজুত করেছেন।
রানাঘাটের এক আবির বিক্রেতা কার্তিক কুন্ডু যেমন বললেন, ‘‘গত বছর করোনার কারণে সব আবির বিক্রি না হওয়ায় ঘরে অনেক আবির জমে ছিল। তার পরেও ভোটের কথা চিন্তা করে তিনি গেরুয়া ও সবুজ আবির মজুত করেছি।’’ বাজার এখনও সে ভাবে জমে না উঠলেও পরিস্থিতি দেখে এ বছর বিক্রির ব্যাপারে আশাবাদী কার্তিক। তেহট্টের এক আবির ব্যবসায়ী লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়ও জানালেন, এ বছর নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই বেশি করে আবির মজুত করছেন তিনিও।
অন্যান্য বছরের মতো দোলের দিন লাল, গোলাপি, হলুদ আবিরের সঙ্গে সঙ্গে এ বছর গেরুয়া আর সবুজ আবিরের চাহিদা ও খানিক বেশি হবে বলে ধারণা করছেন অনেক ব্যবসায়ী। তাঁরা জানান, সামনে ভোট থাকায় দোলের দিন ও বিশেষ বিশেষ দলের সমর্থকেরা নির্দিষ্ট রঙের আবিরই পছন্দ করবেন। আর বাজারে এখন সবুজ ও গেরুয়ার প্রভাব বেশি হওয়ায় সেই রং দু’টিই বেশি চাইবেন বিশেষ বিশেষ দলের সমর্থকেরা বলেও ধারণা তাঁদের। কৃষ্ণনগরের এক আবির প্রস্তুতকারক তপন পাল জানালেন, ‘‘ইতিমধ্যেই প্রায় চারশো বস্তা গেরুয়া ও সবুজ আবির বিক্রি হয়ে গিয়েছে তার কারখানা থেকে।’’ এখন দোলের জন্য গোলাপি ও লাল আবির তৈরির কাজ চলছে। দোল মিটলে ভোটের পরিস্থিতি দেখে আবার সবুজ বা গেরুয়া আবির তৈরি শুরু করবেন বলে জানান তিনি।