মাস্ক ছাড়াই বুনিয়াদপুরের সভায় অমিত শাহ। নিজস্ব চিত্র।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের একাধিক বার ‘বহিরাগত’ বলে আক্রমণ করেছেন। তারই জবাব দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুরে হরিরামপুরে এক জনসভা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, তিনি বহিরাগত নন, বরং যে ভোটব্যাঙ্কের উপরে নির্ভর করে মমতা বাংলা শাসন করতে চাইছেন, তাঁরা বহিরাগত এবং অনুপ্রবেশকারী। তিনি বলেন, ‘‘অনুপ্রবেশকারীদের যে ভোটব্যাঙ্ক, তারাই বহিরাগত। তাদের উপরে নির্ভর করে আপনি বাংলা শাসন করতে চাইছেন।’’ এ দিকে করোনা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কঠোর নির্দেশ সত্ত্বেও এ দিন সভার সময়ে মাস্ক ছিল না অমিতের মুখে। মঞ্চে থাকাকালীন সেটি প্রায় পুরো সময়টাই তাঁর থুতনি থেকে ঝুলতে দেখা যায়।
অমিতের ‘অনুপ্রবেশকারী ভোটব্যাঙ্ক’ মন্তব্যে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা বলছেন, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনেও তৃণমূল মোট যে ভোট পড়েছিল, তার ৪৩ শতাংশ পেয়েছিল। তা হলে কি অমিত এঁদের সকলকে বহিরাগত এবং অনুপ্রবেশকারী বলে দেগে দিলেন? তাঁদের প্রশ্ন, এটা কি ভোটারদের অপমান নয়?
দক্ষিণ দিনাজপুরের যুব তৃণমূলের সভাপতি অম্বরীশ সরকার বলেন, ‘‘এই কথা বলে অমিত শাহ বাংলার জনগণকে অপমান করেছেন। সেই সঙ্গে এনআরসি করে বাঙালি তাড়ানোর যে ছক কষেছেন তাঁরা, তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন।’’ একই সঙ্গে তৃণমূলের বক্তব্য, সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ তো কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। অমিত নিজেই সেই দফতরের মন্ত্রী। কাজেই অমিতের অভিযোগ অনুযায়ী সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটলে তার দায় অমিত নিজেই এড়িয়ে যেতে পারেন না। তৃণমূলের দাবি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শাহ যে ব্যর্থ, এই মন্তব্যেই তাই প্রমাণিত হয়েছে। এর জবাবে বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অসহযোগিতার জন্য এখনও বাংলার সম্পূর্ণ সীমান্ত ঘেরা সম্ভব হয়নি। অনুপ্রবেশ রুখতে কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যের স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকাও রয়েছে। এই রাজ্য তথা স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতির জন্য অনুপ্রবেশ বন্ধ করা যাচ্ছে না।’’