ক্ষতিগ্রস্ত: এই বাড়িই ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ইলামবাজারের সাহাপুর গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।
নানুরের পরে ইলামবাজার। দলের প্রচার ও মিছিলে যোগ দেওয়ায় ফের বিজেপি-র এক কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে জয়দেব কেঁদুলি অঞ্চলের সাহাপুর গ্রামে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ইলামবাজারের ছোটচক গ্রামের ৬৫ ও ৬৬ নম্বর বুথে মিছিল করে ভোটের প্রচার চালাচ্ছিলেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। অভিযোগ, সেই সময় হঠাৎই পিছন দিক থেকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ইট-পাটকেল ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। তাতে এক জন পুলিশ কর্মী এবং পাঁচ জন বিজেপি কর্মী সমর্থক আহত হন। বিজেপি নেতৃত্বের আরও অভিযোগ, তাঁদের মিছিলে জয়দেব অঞ্চলের সাহাপুর গ্রামের দলীয় কর্মী শেখ জাকির নামে এক ব্যক্তি যোগ দেওয়ায় শুক্রবার রাতে তাঁর বাড়িতেও ভাঙচুর চালায় তৃণমূলের লোকজন। জাকিরের বাড়ির একটি ঘরের দেওয়াল ভেঙে ফেলা হয়, ঘরে থাকা বিভিন্ন জিনিসপত্র ফেলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
জাকিরের দাবি, ‘‘ছোটচকের মিছিলে যোগ দেওয়ার কারণেই তৃণমূলের কর্মীরা আক্রোশের বশে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। আমি পুলিশকে সব জানিয়েছি। আমরা চাই, পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিক।’’ ছোটচকের মিছিলে যোগ দেওয়ার ‘অপরাধে’ সাহাপুর গ্রামেরই বিজেপি সমর্থক শেখ সিরাজের একটি ট্রাক্টরও শুক্রবার রাতে তৃণমূলের লোকজনেরা ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
ইলামবাজারের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি চিত্তরঞ্জন সিংহ বলেন, “ওরা (তৃণমূল) বুঝতে পেরেছে, ওদের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। তাই তারা এই ধরনের সন্ত্রাস করে ভোটে জিততে চাইছে। তবে এই সব করে বিজেপিকে আটকানো যাবে না।” ইলামবাজারের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ফজলুল রহমান পাল্টা বলেন, “সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। এর সঙ্গে তৃণমূল কোনও ভাবেই জড়িত নয়। নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঢাকতেই বিজেপি তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।”
এই ঘটনার পর থেকেই এলাকা থমথমে হয়ে রয়েছে। ওই গ্রামগুলিতে নতুন করে যাতে অশান্তি না ছড়া, তার জন্য পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ছোটচক ও সাহাপুরের ঘটনায় পুলিশের দু’টি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা-সহ মোট পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় তৃণমূল, বিজেপি দু’পক্ষের মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার বোলপুর আদালতে ধৃতদের তোলা হলে বিচারক তাঁদের ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।