এই ভাবে হুইল চেয়ারে বসেই প্রচার সারবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সফরসূচিতে কিছু রদবদল করে আজ রবিবারই বেরিয়ে পড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার মমতা নিজেই জানিয়েছেন, আগামী ১৭ মার্চ বিকেলে তিনি ইস্তাহার প্রকাশ করতে চান।
ঝাড়গ্রামের বদলে সোমবার তাঁর এই পর্বের সভা শুরু হচ্ছে পুরুলিয়ার ঝালদা থেকে। একই দিনে বলরামপুরেও সভা করবেন তিনি। মঙ্গলবার যাবেন বাঁকুড়ায়। সেখানে তিনটি সভা করবেন মেজিয়া, ছাতনা ও রাইপুরে। বুধবার কলকাতায় ফেরার আগে ঝাড়গ্রাম জেলায় দুটি সভার কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। তারপরে বিকেলে কলকাতায় দলীয় ইস্তাহার প্রকাশ করে বৃহস্পতিবারই মমতা চলে যাবেন পশ্চিম মেদিনীপুর।
এর মধ্যে নন্দীগ্রামে মমতার আঘাত লাগার ঘটনা কেন্দ্র করে আজ রবিবার গাঁধী মূর্তি থেকে হাজরা পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছে তৃণমূল যুব কংগ্রেস। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিকেল ৩টেয় সেই মিছিল শুরু হবে। পরে হাজরা মোড়ে সভা। অনেকের ধারণা, সুযোগ থাকলে মমতা হয়ত হাজরার মঞ্চও একবার ঘুরে যেতে পারেন।
নন্দীগ্রাম সফরের সময় পায়ে গুরুতর আঘাত লাগায় মমতার পুরুলিয়ার নির্ধারিত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। ঠিক ছিল, সোমবার ঝাড়গ্রাম থেকেই পরবর্তী সফর শুরু করবেন তিনি। কিন্তু শনিবার সকালে দলীয় সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে মমতা জানান, তিনি পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার কর্মসূচি বজায় রাখতে চান। সেই মতো নতুন সফরসূচি তৈরি হয় তাঁর।
চিকিৎসকেরা মমতাকে অন্তত দু’দিন বিশ্রামের পরামর্শ দিলেও তিনি তা পুরোপুরি মেনে নিতে রাজি হননি। তবে একটানা লম্বা সময় হেলিকপ্টারে হুইলচেয়ারে যাতে বসে থাকতে না হয় সেই জন্য যাত্রাপথ ভাগ করে তিনি রবিবার যাবেন দুর্গাপুর পর্যন্ত। সেখানে রাত কাটিয়ে সোমবার দুর্গাপুর থেকে পুরুলিয়া। সেখান থেকেw বাঁকুড়া কপ্টারে খুব বেশি সময় লাগবে না। এই ভাবেই ছোট ছোট দূরত্বে তিনি যাত্রাপথ ভাগ করে নিতে পারেন। এমনকী প্রয়োজন হলে ঝাড়গ্রাম থেকে কলকাতায় আসার পথে মাঝপথে অল্প সময়ের জন্য থামতে পারেন।
শনিবার নিজের ঘরে হুইলচেয়ারেই সারাদিন কেটেছে তৃণমূলনেত্রীর। এ নিয়ে বিরক্তি এবং বিষণ্ণতা দুই-ই প্রকাশ করেছেন তিনি। ওয়াকিং মেশিনে বা রাস্তায় লম্বা দূরত্বে হাঁটা তাঁর নিত্য অভ্যাস। পায়ের আঘাতে আপাতত সেই সুযোগও নেই। শারীরিক ‘ফিটনেস’-এর সেই দিকটি নিয়েও তিনি ভাবছেন।
হাসপাতালে থাকাকালীন মমতাকে এসএমএস পাঠিয়ে তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছিলেন সনিয়া গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। দু’জনেই জানিয়েছিলেন ভোটপ্রচারে বেরিয়ে মমতার এই ভাবে আহত হওয়ার ঘটনায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। শনিবার মমতা তাঁদের দু’জনকেই প্রত্যুত্তর দিয়ে ধন্যবাদ জানান। এ দিনই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে মমতার বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা।