—ফাইল চিত্র।
নির্দেশ মতো আসানসোল পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। নতুন প্রশাসক হয়েছেন পুরকমিশনার নীতীন সিংঘানিয়া। সোমবার রাজ্য সরকারের তরফে এই নির্দেশনামা আসানসোল পুরসভায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিনই নতুন পদের দায়িত্বভার নেন পুরকমিশনার। অমরনাথবাবুর পাশাপাশি, প্রশাসক বোর্ডের বাকি সাত সদস্যকেও এ দিন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নীতীনবাবু বলেন, ‘‘গরমে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দেয়। সেই সমস্যার সমাধান করাই আমাদের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ। জল দফতরের কর্মী, আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধানের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের ১৩৫টি পুরসভা ও পুরনিগমের মধ্যে ১২৫টি পুরসভার মেয়াদ গত বছর। আসানসোল পুরসভার মেয়াদ শেষ হয় ১৪ অক্টোবর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন করা যায়নি। সে কারণে প্রশাসক বসানো হয়। যাঁরা পুরসভার মেয়র, চেয়ারম্যান, মেয়র পারিষদ ছিলেন, তাঁদেরই ফের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। আসানসোলে সাত সদস্য বিশিষ্ট প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোনীত হন পুরসভার প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। প্রায় দু’মাস পরে ১৭ ডিসেম্বর জিতেন্দ্রবাবু প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন। ৯ জানুয়ারি নতুন চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয় পুরসভার বিদায়ী অধ্যক্ষ অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে মামলা হলেও আদালত প্রশাসকদের সরানোর নির্দেশ দেয়নি। তবে সুপ্রিম কোর্ট যত শীঘ্র সম্ভব পুরসভাগুলিতে নির্বাচনের কথা বলেছিল।
গত ৪ মার্চ বিজেপি নির্বাচন কমিশনের কাছে রাজ্যের ১২৫টি পুরসভা ও পুরনিগমের প্রশাসক পদ থেকে তৃণমূলের নেতাদের সরানোর দাবি তোলে। তাদের যুক্তি, মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে প্রাক্তন মেয়র ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পুরসভা ও পুরনিগমের প্রশাসক পদে বসিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে ভোটে তাঁরা প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতে পারেন। সম্প্রতি কমিশন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, পুরসভাগুলির জরুরি কাজকর্ম যাতে ঠিক মতো চলে, আবার ভোটের নিরপেক্ষতা নিয়ে ভোটারদের মনে কোনও সংশয় তৈরি না হয়, আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ থাকাকালীন সব রাজনৈতিক দলই সমান সুযোগ পায়, তার জন্যই পুরসভার প্রশাসক পদে থাকা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রশাসনের কাজকর্ম থেকে সাময়িক ভাবে নিরস্ত করা হচ্ছে। সেই নির্দেশ মতো অমরনাথবাবুকে পদ থেকে সরিয়ে দিল রাজ্য সরকার। অমরনাথবাবু বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ পালন করছি।’’
সোমবার অবশ্য পুরসভায় দেখা যায়নি অমরনাথবাবুকে। প্রশাসক বোর্ডের কয়েক জন সদস্যকে দেখা গেলেও কেউ নিজেদের অফিসে বসেননি। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ পুরসভায় আসেন পুর-কমিশনার নীতীন সংঘানিয়া। তিনি জানান, একটি কার্যকরী দল গঠন করা হয়েছে। পুরসভার আধিকারিকেরা রয়েছেন এই দলে। তাঁরা বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কাজ করবেন। তিনি বলেন, ‘‘সরকারের তরফে নির্দেশনামা পেয়েছি। কমিশনারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি, প্রশাসকের দায়িত্বও পালন করব।’’