—প্রতীকী ছবি।
ভোটে লড়ছেন ‘ছেলে’ মইদুল। প্রায় ৬০ কিমি দূর থেকে তাঁর জন্য আশীর্বাদস্বরূপ তাঁর জন্য বেলপাতা পাঠালেন অশীতিপর ‘মা’ নীহারকণাদেবী। সঙ্গে নির্বাচনের খরচ বাবদ নগদ পাঁচ হাজার টাকা।
মগরাহাট (পশ্চিম) কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলাম। ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর আইএসএফের হয়ে ‘খাম’ চিহ্ন নিয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন তিনি। শিক্ষক সংগঠনের নেতা হওয়ার সুবাদে সংগঠনের কাজে গোটা রাজ্যে ঘুরেছেন মইদুল। বেশ কয়েক বার গিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল মহিষাদল সুন্দরা মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক তরুণ সামন্তের সঙ্গে। মইদুলের ভোটে লড়ার খবর শুনে সোমবার নগদ পাঁচ হাজার টাকা ও একটি বেলপাতা খামে ভরে তাঁর কাছে পাঠিয়েছেন তরুণবাবুর মা বছর পঁচাশির নীহারকণাদেবী।
মঙ্গলবার নীহারকণা বলেন, ‘‘ওকে অনেক দিন ধরেই চিনি। জন্ম না দিলেও মইদুল আমার ছেলের মতোই। তাই বেলপাতা পাঠিয়ে ওকে আশীর্বাদ করেছি।’’ তারপরে যোগ করেন, ‘‘শুনেছি ভোটে লড়তে অনেক টাকা খরচ। আমাকে ছেলে-মেয়েরা মাঝে মধ্যে যা হাতখরচ দেয়, সেটা জমিয়ে রাখি। পাঁচ হাজার টাকা জমেছিল। পুরোটাই পাঠিয়ে দিয়েছি।’’ সোমবার মইদুলের সঙ্গে দেখা করে তরুণ তাঁর হাতে মায়ের পাঠানো খাম তুলে দেন।
ঘটনায় আপ্লুত মইদুল। বলেন, ‘‘খামটা খোলার পরে আমি চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। টাকার থেকেও অনেক বড় পাওনা আশীর্বাদস্বরূপ পাঠানো মায়ের বেলপাতা।’’
রাজনীতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই সামন্ত পরিবারের। কোনও রাজনৈতিক দলকে ভোটের জন্য অর্থসাহায্য করেন না বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা। তবে কেন মইদুলকে অর্থসাহায্য?
নীহারকণাদেবী বলেন, ‘‘ও তো আর পাঁচজনের মতো রাজনীতি করে না। মইদুল শিক্ষকদের প্রতিনিধি। শুনেছি অনেক লড়াই করেছে অস্থায়ী শিক্ষকদের জন্য। আমার ছেলেটাও অস্থায়ী শিক্ষক। ওদের যন্ত্রণার কথা জানি। তাই ওকে সাহায্য করেছি।’’