বিধিভঙ্গ: মাস্কের বালাই না নেই তিন বিজেপি প্রার্থীর, সাংসদেরও। বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র।
দুপুর দুটো। গেরুয়া রঙের জামা, শাড়ির ঢল নামল রাজপথে। মানুষের স্রোতে ভেসে যাওয়া রাস্তা থেকে ধামসা, নাকাড়ার বাজনার সঙ্গে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিতে কেঁপে উঠল বালুরঘাট।
শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ, তপন ও গঙ্গারামপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়ন ঘিরে শহরজুড়ে ওই চার কেন্দ্রের আদিবাসী জনজাতি, রাজবংশী ও অন্যান্য মানুষের মহামিছিল দেখে অবাক অনেকেই। মনোনয়ন শেষে গেরুয়া শিবিরের এমন বর্ণাঢ্য মিছিল নিয়ে শাসক শিবিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তৃণমূল দাবি করেছে, তাদের মনোনয়নের দিনে মানুষের উপস্থিতি বিজেপির ওই মিছিলকে ছাপিয়ে যাবে।
এদিন সকাল ১১টার মধ্যে বালুরঘাটের জেলা কার্যালয়ে উপস্থিত হন গঙ্গারামপুরের বিজেপি প্রার্থী সত্যেন রায়, তপনের বুধরাই টুডু, কুমারগঞ্জের মানস সরকার। ছিলেন বালুরঘাটের প্রার্থী অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ীও। নির্বাচন কমিশনের কোভিড সতর্কবিধি মেনে পুলিশের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনিক ভবনের দু’দিকের রাস্তায় বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। নিয়ম মেনে সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, জেলা সভাপতি বিনয় বর্মণ ও সম্পাদক বাপি সরকারের নেতৃ্ত্বে বিজেপির ওই চার প্রার্থী প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসেন।
সে সময় একসঙ্গে চার প্রার্থীকে নিয়ে সাংবাদিকরা ছবি তোলার আবদারে ছন্দপতন ঘটে। বিজেপি নেতাদের ভিড় থেকে মিডিয়াকে বাদ দিন, এগিয়ে চলুন। গুলি মারুক মিডিয়া। এমন সব উক্তিও ওঠে। দলের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষমা চেয়ে নেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় কথ্য ভাষায় গুলি মারোর অর্থ, আপাতত এই কাজ বাদ দিয়ে অন্য কাজ করো। রাজনৈতিক অপরিপক্কতা থেকে কেউ এমন কথা বলে অন্যায় করেছেন। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।’’ এরপরই প্রার্থীরা একে একে মনোনয়ন পেশ করেন।
এদিন তপনের বিজেপি প্রার্থী বুধরাই টুডু আদিবাসী পোশাকে সেজে আসেন। তিনি জানান, এলাকার অনুন্নয়নের বিরুদ্ধে মানুষের রায় তাঁর পক্ষেই যাবে। কুমারগঞ্জের প্রার্থী মানস সরকারের কথায়, ‘‘বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডল রাস্তাঘাট থেকে পানীয় জলের জন্য কোনও কাজই করেননি।’’ এবারেও তোরাফ কুমারগঞ্জের প্রার্থী। মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে বলে জানান মানস। এরপর শহরের মঙ্গলপুর এলাকায় কর্মী জমায়েতে শামিল হয়ে বালুরঘাটের প্রার্থী অশোক লাহিড়ী বলেন, ‘‘এই বিপুল মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি জানান দিচ্ছে, এবার জেলার ৬টি আসনেই পদ্ম ফুটতে চলেছে।’’