প্রতীকী ছবি।
রাত পোহালেই রাজ্যে প্রথম দফার ভোট। তার আগে বৃহস্পতিবার রাতে কাঁথির একটি লজ থেকে জেলার বাইরে থেকে আসা তিন যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করল। যে ঘটনা তৃণমূলের বহিরাগত তত্ত্বে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। শুক্রবারই পশ্চিম মেদিনীপুরে একাধিক প্রচার সভায় এই প্রসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে কাঁথি শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক যুবককে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ওই যুবক একটি লজে উঠেছেন। পরে ওই লজের সামনে কয়েকশো মানুষ গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ গেলে তাদের সামনেই ওই যুবককে গণধোলাই দেয় জনতা। তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ওই যুবককে জেরা করে আরও দু’জনের খোঁজ পায় পুলিশ। পরে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার ধৃতদের কাঁথি আদালতে তোলা হলে তাদের জামিনের আদেশ দেন বিচারক।
দিন কয়েক আগে খেজুরির নিচকসবায় চারজন ‘বহিরাগত’কে ধরে স্থানীয়েরা তালপাটি উপকূল থানা তুলে দেন। ওই থানা সূত্রের দাবি, আটক চারজনের কাছে পাওয়া নথিপত্র দেখে জানা যায় তাঁরা দিল্লির বাসিন্দা। পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে যাঁদের ধরা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে খেজুরিতে আটকদের তিনজন রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে চাপানউতোরে এলাকায় উত্তেজনা বাড়ে। এলাকায় বহিরাগতদের ঢুকিয়ে সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সমাজ মাধ্যমে সরব হন। তৃণমূলকে পাল্টা কটাক্ষ করে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পা ভাঙার মতো এটাও একটা নাটক। সাধারণ মানুষের প্রতি বিজেপির আস্থা রয়েছে। মানুষ নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেই বিজেপি প্রার্থীদের জয়ী করবেন। এ ধরনের গুন্ডা সংস্কৃতি তৃণমূলের আমদানি করা।’’
গোটা ঘটনাকে বিকৃত করা হচ্ছে দাবি করে কাঁথি শহরের টিএমসিপি সভাপতি শুভদীপ গিরিকে ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির এক কর্মীর বিরুদ্ধে।
আগেই বহিরাগতদের নন্দীগ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। এবার শুভেন্দুর নিজের এলাকা বলে পরিচিত কাঁথিতে বহিরাগতদের গ্রেফতার নিয়ে ফের সুর চড়িয়েছে শাসক দল। এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরে একাধিক দলীয় সভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, ‘‘কাঁথিতে বন্দুক সহ ৩০ জন বহিরাগত ধরা পড়েছে’’
যদিও জেলার পুলিশ সুপার সুনীল কুমার যাদব কাঁথির ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কাঁথি থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাদের কাছ থেকে কোনও অস্ত্র মেলেনি। ধৃতেরা কী ভাবে ও কেন এসেছিল সে বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে।’’