অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
ঝাড়গ্রামের দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ডায়মন্ড হারবারে। মঙ্গলবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে জনসভা করার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। কিন্তু ‘দেরি হওয়ায়’ শেষ মুহূর্তে সেই সভা বাতিল করেন তিনি। তার বদলে ফোনে বার্তা দেন কর্মী-সমর্থকদের। বিজেপি-র দাবি, সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় শাহের হেলিকপ্টার নামাতে সমস্যা হতে পারে বলে সভা বাতিল করা হয়েছে। যদিও তৃণমূলের বক্তব্য, ভিড় না জমায় সভা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন শাহ।
মঙ্গলবার ফোনে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের দেওয়া বার্তায় সভায় উপস্থিত না থাকতে পারার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন অমিত। কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘ভোট গণনার পর অবশ্যই আমি এখানে আসব। আপনারা রাজ্যের দুস্কৃতীরাজ এবং সিন্ডিকেট রাজ বন্ধ করবেন।’’ পরে টুইটারে বার্তা দেন তিনি। সভায় কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি বোঝাতে একটি ভিডিয়োও শেয়ার করেন।
রাজ্যে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আগে মঙ্গলবার ছিল প্রচারের শেষ দিন। সে উপলক্ষ্যে নন্দীগ্রাম,পাঁশকুড়া পশ্চিম, ডেবরা-সহ একাধিক বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে জনসভা এবং রোড শো করেন শাহ। শেষ পর্বে তাঁর গন্তব্য ছিল ডায়মন্ড হারবার। কথা ছিল, বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সরিষার মাঠে ডায়মন্ড হারবারের দলীয় প্রার্থী দীপক হালদার এবং ফলতার প্রার্থী বিধান পাড়ুইয়ের সমর্থনে জনসভা করবেন তিনি। সেই মতো বিজেপি কর্মী সমর্থকরা হাজির হয়েছিলেন সভাস্থলে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পর ২ ঘন্টা কেটে গেলেও দেখা মেলেনি অমিতের। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিজেপি সূত্রে জানা যায়, অন্ধকার হওয়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কপ্টার নামতে সমস্যা হচ্ছে।
অমিত শাহের জন্য অধীর অপেক্ষায় কর্মী-সমর্থকরা। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের অবশ্য বক্তব্য, সভায় লোকজন তেমন না হওয়াতেই ঝাড়গ্রামের মতো ডায়মন্ড হারবারেও সভা বাতিল করেছেন শাহ। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল নেতা শামিম আহমেদের ব্যাখ্যা, ‘‘বিজেপি-র সভা পুরোপুরি ফ্লপ হয়েছে। তাই সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে সভা বাতিল করেছেন শাহ। আগামী দিন ভোটেও মানুষ বুঝিয়ে দেবে এই দাঙ্গাবাজদের বাংলায় কোন স্থান নেই।’’
ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি নেতা দেবাংশু পণ্ডার অবশ্য দাবি, ‘‘তৃণমূল কী বলল, না বলল তাতে কিছু যায় আসে না। মিথ্যা প্রচার করা ওদের স্বভাব। তৃণমূলের হুমকি উপেক্ষা করেই দু’টি বিধানসভা থেকে বহু মানুষ সভায় যোগ দিয়েছিলেন।’’ ঘণ্টা দু’য়েক অপেক্ষার পর শাহের দেখা না পেয়ে হতাশ বিজেপি কর্মীদের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফলতার এক বিজেপি কর্মী যেমন বললেন, ‘‘ভোটের আগে অমিতজির কথা শুনব বলে কাজ কামাই করে সভায় এসেছিলাম। কিন্তু নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছি। তবে লড়াই ছাড়ছি না।’’