ফাইল চিত্র।
ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পাঁশকুড়া এলাকায় বাড়ি বাড়ি জনসংযোগে নেমে পড়েছে শাসক দল। প্রচারে গিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে নানা ক্ষোভের কথাও শুনতে হচ্ছে। মানুষের সেই ক্ষোভ প্রশমনে নেতাদের ঢাল দলনেত্রীই। বাসিন্দারা তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানালে তাঁদের কাছে তৃণমূলের নেতৃত্বের আর্জি, ‘মমতাকে দেখে ভোট দিন’। মানুষের এমন ক্ষোভের মুখে লোকসভা ভোটের অঙ্কে পাঁশকুড়া পশ্চিমে পিছিয়ে থাকা তৃণমূল এবারের নির্বাচনে কতটা সুবিধা করতে পারবে সে দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভায় প্রার্থী হন নন্দীগ্রামের ফিরোজা বিবি। পাঁশকুড়ার বাইরে প্রার্থী বেছে নেওয়ায় দলে সেই সময় থেকেই মাথা চাড়া দেয় গোষ্ঠীকোন্দল। সে বার ফিরোজা বিবি খুব অল্প ব্যবধানে জয় পান। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য অধিকাংশ জায়গায় বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি বলে অভিযোগ ছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভায় তৃণমূলকে প্রায় ৩ হাজার ভোটে পিছনে ফেলে দেয় বিজেপি। সরকারি চাকরিতে ভাটা, স্বজনপোষণ, নেতাদের দুর্নীতি ইত্যাদি ইস্যুতে গত দু’বছরে পাঁশকুড়ায় শাসক দলের পায়ের তলার মাটি অনেকটাই আলগা হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শুক্রবার ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পর বাড়ি বাড়ি প্রচার শুরু করে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শনিবার পাঁশকুড়ার রাধাবল্লভচক এলাকায় ভোট প্রচারে যান তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দীপ্তি জানা, পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান নন্দ কুমার মিশ্র, পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন মালিক। এলাকার মানুষজন তাঁদের কাছে স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য ওই এলাকায় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে নাগরিক পরিষেবা প্রদান নিয়ে এর আগে অসংখ্য অভিযোগ ও দুর্নীতি সামনে এসেছিল। আমপানের ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়েও বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। ভোটারদের সেই ক্ষোভ সামাল দিতে তৃণমূল নেতৃত্ব দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে ভোট দেওয়ার আর্জি জানান।
এবারের ভোটপ্রচার যে আগের মতো সাবলীল হবে না, তা কার্যত মেনে পাঁশকুড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি দীপ্তি জানা বলেন, ‘‘কিছু মানুষের ক্ষোভ আছে এটা সত্যি। আমরা সেগুলো মেটানোর চেষ্টা করছি। এ বারের নির্বাচনে পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের সুনাম অক্ষুণ্ণ থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।"