তমলুকের নিমতৌড়িতে জোট প্রার্থীদের নিয়ে সভায় সূর্যকান্ত মিশ্র। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।।
সিপিএম ‘টেক স্যাভি’ হতে চেষ্টা করছে ভোটের অনেক আগে থেকেই। সেই অনুযায়ী এলাকায় এলাকায় শিবিরও করেছে বাম দলগুলি। প্রবীণ নেতা-কর্মীদের প্রচারে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের কারিগরি শিখিয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যাপকেরা।
আর এ বার ভোটের দিনে প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানালেন স্বয়ং সূর্যকান্ত মিশ্র। রবিবার বিকেলে তমলুকের নিমতৌড়িত স্মৃতি সৌধ মাঠে আয়োজিত এক সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন তিনি। বলছিলেন গত পাঁচ বছরে তৃণমূলের ‘নৈরাজ্যে’র কথা। বলছিলেন শাসক দলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কী ভাবে এক জোট হয়ে প্রতিরোধ গ়ড়ে তুলতে হবে। হঠাৎই নিজের পাঞ্জাবীর পকেট থেকে বার করলেন একটি মোবাইল ফোন। কর্মীদের উদ্দেশে বললেন, ‘‘এখানে আমাদের হাজার হাজার ছেলেপুলে আছেন। প্রত্যেক বুথে অন্তত একজন যার কাছে এরকম একটা মোবাইল আছে। ছবি এক মিনিট-দু’মিনিট লাগবে তুলতে। তারপরে পাঠাতে এক মিনিট লাগবে।’’
সূর্যবাবু সরাসরি বলেন, ‘‘যদি আপনার বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে গুড়জল খায়, ঘরে বসে ঘুমোয়। পাড়ার কোথাও ভোটাদের আটকাচ্ছে কিনা, ভোট লুঠে চেষ্টা হচ্ছে কিনা, হামলা হচ্ছে কিনা— সব ছবি পাঠাতে এক মিনিট লাগবে। আর পাঁচ মিনিট লাগবে তা কলকাতা থেকে দিল্লি হয়ে নির্বাচন কমিশনের দফতরে পৌঁছাতে।’’ প্রথম দফার ভোট প্রসঙ্গে সূর্যবাবু দাবি করেছেন, মাত্র এক ভাগ গোলমাল তাঁরা রুখতে পেরেছিলেন। বাকি আছে ৯৯ ভাগ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দফার ভোট থেকেই মুখ্যমন্ত্রী পিছু হটতে শুরু করেছেন। যত দফা হবে তত উনি পিছোতে থাকবেন।’’
এ দিন তমলুক ও হলদিয়া মহকুমার সাত বিধানসভা এলাকার বামজোটের প্রার্থীদের সমর্থনে কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি আনোয়ার আলি, ময়না বিধানসভার কংগ্রেস প্রার্থী মানিক ভৌমিকের সঙ্গে আসা ব্লক কংগ্রেস নেতা সন্দীপ সামন্ত, বিজয় বেরাও।
রবিবার দুপুরে কাঁথিতেও কর্মিসভা করেন সূর্যকান্তবাবু। তিিন বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলে প্রথম দফার ভোট পরিস্থিতি দেখে আতঙ্কিত মুখ্যমন্ত্রীর আর্তনাদ, যা চান তাই দেব। আমরা বলছি, গত পাঁচবছর ধরে আপনি অনেক কিছু দিয়েছেন। এ বার শুধু ১৯ মে রাজভবনে আপনার পদত্যাগ পত্রটা দিয়ে আসুন।” কাঁথি ও এগরা মহকুমার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের বিরোধী জোটের প্রার্থীদের সমর্থনে এ দিন কর্মিসভা করেন সূর্যবাবু। সূর্যকান্তবাবুর চল্লিশ মিনিটের বক্তব্যের আগাগোড়াই ছিল আক্রমণাত্মক। নারদ স্টিং অপারেশন কাণ্ড নিয়ে তৃণমূলের দলীয় তদন্তের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যঙ্গ করে তিনি বলেন, “এতো বেড়ালকে মাছ পাহারায় রাখা।” কর্মীসভায় সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক প্রবোধকুমার পাণ্ডা, ডিএসপির হৃষীকেশ পয়ড়্যা, ফরোয়ার্ড ব্লকের অশ্বিনী সিংহ ও আরএসপির জেলা সম্পাদক অমৃত মাইতি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি।