ভোটকর্মীদের প্রস্তুতি কোচবিহারে। — নিজস্ব চিত্র
ঝড় উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে ভোটকেন্দ্রের টিনের চাল। হাওয়ার দাপটে ভেঙে পড়েছে শেড। জল জমেছে বুথে যাওয়ার রাস্তায়। মাত্র তিন ঘণ্টার বৃষ্টি আর ঘণ্টাখানেকের ঝোড়ো হাওয়ায় বুধবার কোচবিহারের ভোট প্রস্তুতিতে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গেই তৈরি হয়েছে ভোটের দিন কী হয়, তা নিয়ে আশঙ্কা।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ, বৃহস্পতিবারও কোচবিহারে মাঝারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। উত্তরবঙ্গের আকাশে নিম্নচাপ ঘনীভূত হওয়াতেই ঝড়-বৃষ্টি চলছে বলে আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। আগামী দু’দিন এই পরিস্থিতি চলতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এই পুর্বাভাসের কথা জেনেই বাড়তি সর্তকতা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সিতাই, দিনহাটা, মেখলিগঞ্জের কিছু এলাকা কিছু এলাকা নিয়েই প্রশাসনের উদ্বেগ বেশি। দরিবসের মতো কয়েক জায়গায় নদী পার হয়ে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয়। বৃষ্টি হলে ওই সব এলাকায় নজরদারির ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে।
সে কারণেই দুর্যোগের মুখেও অবাধে ভোট করাতে কয়েক দফা পদক্ষেপের কথাও ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। সব বুথের ইভিএম পলিথিনের প্যাকেটে মুড়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ দিন ভোটকর্মীদের ইভিএম তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়ার মাঝেই তুমুল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। ইভিএম বিলির প্রক্রিয়া বেশ কিছু ক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। সব ইভিএম পলিথিনের দু’টো প্যাকেটে মুড়ে ভোটকর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “বৃষ্টি হলে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইভিএম পলিথিনে মুড়ে দেওয়া হয়।”
এ ছাড়াও ৩৫০টি বুথের চাল টিন, ত্রিপল দিয়ে ‘রেন-প্রুফ’ করে তোলা হয়েছে। নদী তীরবর্তী লাগোয়া এলাকায় বিএসএফ জওয়ানদের নৌকা নিয়ে তৈরি থাকতে বলেছে প্রশাসন। সরকারি সূত্রের খবর, তুফানগঞ্জের চর বালাভূত, দিনহাটার জারিধরলা, দরিবস, মেখলিগঞ্জের কুচলিবাড়ির মতো এলাকা বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া। ওই সব এলাকার বেশ কিছু বুথে নদী পেরিয়ে যেতে হয় ভোটকর্মীদের।
বৃষ্টির আশঙ্কার জেরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে বিএসএফের জওয়ানদের নৌকা নিয়ে সাহায্যের জন্য তৈরি থাকতে বলেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘কিছু এলাকায় নৌকা তৈরি রাখা হচ্ছে। বিএসএফ জওয়ানদেরও আমরা তৈরি থাকতে বলেছি।’’
এ বারে ২৪৬৭টি পোলিং স্টেশনে ভোট নেওয়া হবে। ওই স্টেশনের মধ্যে ৩০০টি বুথ এমন রয়েছে, যেগুলির হাল খুব একটা ভাল নয়। মেখলিগঞ্জে এমন ৩০টি বুথ রয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার, এসকে সেন্টারে ভোট নেওয়া হবে। ওই সেন্টারগুলি পরিকাঠামোর দিক থেকে খুব একটা ভাল নয় বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বহু জায়গায় ভোটারদের দাঁড়ানোর জায়গায় শেড নেই। বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী ভাবে শেড তৈরি করা হয়। এ দিনের বৃষ্টিতে মেখলিগঞ্জের উছলপুখুরিতে ১৯৫ নম্বর বুথের টিনের চাল উড়ে যায়। ওই মহকুমাতেই বেশ কয়েকটি বুথের অস্থায়ী শেড ভেঙে পড়ে। হলদিবাড়ি মহাবিদ্যালয় , হলদিবাড়ি হাইস্কুল সহ দক্ষিণ বড় হলদিবাড়ি এলাকা মিলিয়ে ২০ টি বুথের শেডের ক্ষতি হয়েছে।
মেখলিগঞ্জের বিডিও বিরূপাক্ষ মৈত্র বলেন “বুধবার কিছু সমস্যা হয়েছিল। এক ঘন্টার মধ্যে সব ফের ঠিক করা হয়েছে।