প্রতীকী ছবি।
কেউ আশায়, কেউ আশঙ্কায়। শিকেয় ছিঁড়বে কি না— সে প্রশ্নটাই ঘোরাফেরা করছে নেতাদের মধ্যে। আজ, শুক্রবার রাজ্যের সব আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারে তৃণমূল। পূর্ব বর্ধমানে দলের নেতা-কর্মীদের বড় অংশের আগ্রহ এ বার মূলত ছ’টি কেন্দ্রে কে প্রার্থী হন, সে নিয়ে। বর্ধমান দক্ষিণ, মঙ্গলকোট, মন্তেশ্বর, কালনা, ভাতার ও জামালপুর— এই কেন্দ্রগুলি নিয়ে বৃহস্পতিবার বেশি চর্চা চলল দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
তৃণমূল সূত্রে গুঞ্জন রয়েছে, কিছু বিধায়ককে এ বার টিকিট না-ও দিতে পারেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। অনেককে কেন্দ্র বদলে প্রার্থী করার সম্ভাবনাও রয়েছে। যুব নেতাদের তুলে আনার ভাবনাও রয়েছে। বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় অসুস্থতার কথা জানিয়েছে আর প্রার্থী হতে চান না বলে দলীয় নেতৃত্বকে আগেই চিঠি দিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রের দাবি, তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনে পছন্দের এক ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছিলেন দল নিযুক্ত ভোটকুশলী সংস্থার কাছে। লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে বিজেপির থেকে অল্প কিছু ভোটে এগিয়েছিল তৃণমূল। এই আসনে কে প্রার্থী হবেন, সে নিয়ে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কৌতুহল রয়েছে শহরবাসীর অনেকেরও। কয়েকজন নেতার দাবি, ‘‘বহিরাগত প্রার্থী দিলে লড়াই কঠিন হতে পারে।’’
২০১৬ সালে মঙ্গলকোট বিধানসভা বামেদের হাত থেকে আসে তৃণমূলের হাতে। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী তৃণমূলের টিকিটে জিতে মন্ত্রীও হন। এলাকায় দলের একাংশের অসহযোগিতায় স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারেননি অভিযোগ তুলে সম্প্রতি সিদ্দিকুল্লা জানান, তিনি আর মঙ্গলকোটে প্রার্থী হবেন না। সেখানে কে প্রার্থী হবেন, আগ্রহ রয়েছে সে নিয়েও। নতুনহাট, কৈচর থেকে কেউ কেউ নেতৃত্বের কাছে আর্জি জানাচ্ছেন বলে দল সূত্রের দাবি। ফের ‘বহিরাগত’ কাউকে প্রার্থী করা হবে কি না, সে নিয়ে চিন্তা রয়েছে বলে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অনেকে দাবি করেন।
কালনা ও মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। ওই দুই আসনে দল কাদের প্রার্থী করে, সে নিয়ে রীতিমতো চর্চা চলছে এলাকায়। জল্পনায় উঠে এসেছে কয়েকজনের নামও। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, জেলার এক বিধায়কের অনুগামীরা মন্তেশ্বরে ঘরভাড়া নিয়েছেন। জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষও টিকিট পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। কালনায় তিন জনের নাম উঠে এসেছে চর্চায়। শিকেয় ছিঁড়বে কি না, সে নিয়ে ‘টেনশনে’ রয়েছেন বলে জানান ওই নেতানেত্রীরাও।
ভাতার ও জামালপুরে ‘ভূমিপুত্র’ প্রার্থী চেয়ে পোস্টার, ফ্লেক্স, ব্যানার পড়েছে। এই দু’টি বিধানসভায় পুরনো প্রার্থীদের উপরেই দল ভরসা রাখে কি না, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন নেতা-কর্মীরা। জেলায় দু’জন যুব নেতার নাম প্রার্থিতালিকায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জেলা তৃণমূলের একটি অংশের দাবি।
জেলা তৃণমূলের নেতারা গোটা বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, জানান তাঁরা।