শোভন চট্টোপাধ্যায় ও সমীর জানা। নিজস্ব চিত্র।
নারদ-কাণ্ডে অভ্যন্তরীণ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর দল। কিন্তু সেই তদন্তের ফল প্রকাশের আগেই এক অভিযুক্ত নিজেই বলে দিলেন, ‘‘এ সব ভুয়ো।’’
তিনি কে? কলকাতার মেয়র তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়। নারদ নিউজের ফুটেজে যাঁকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে!
রবিবার পাথরপ্রতিমার দলীয় প্রার্থী সমীর জানার হয়ে প্রচারে গিয়ে শোভন ঘুষ-কাণ্ডে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন। ফুটেজ নিয়ে শোভনবাবুর দাবি, এগুলি সব ভুয়ো। কুৎসা রটানোর জন্যই করা হচ্ছে। বফর্স কেলেঙ্কারিতে রাজীব গাঁধীর নাম জড়ানোর কথা তুলে শোভনবাবু বলেন, ‘‘বফর্স কেলেঙ্কারির সময় স্লোগান উঠেছিল, ‘রাজীব গাঁধী চোর হ্যায়’। তার পর অন্তত পাঁচ বার সরকার বদলেছে। কিছু প্রমাণ হয়েছে? আড়াই বছর আগেকার একটি ভুয়ো স্টিং হঠাৎ করে তুলে ধরা হল। বিরোধীরা রাজনৈতিক মোকাবিলায় যেতে পারবেন না বলেই এ সব করছে। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তিতে কালি লাগানো যাবে না।’’ যা শুনে বিরোধীদের দাবি, এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে তদন্তে কী বেরোবে।
নারদ-ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পর পরই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতারা তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছিলেন। একই সুরে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শুরুতে বলেছিলেন, ‘‘কুৎসা করছে, গোল্লা পাবে’’, বলেছিলেন ‘‘ভিডিওটা ভেজাল’’। সেই নারদ কাণ্ড নিয়ে এ বার দলের অন্দরে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেন মমতা। এবং সেটা করতে গিয়ে প্রকারান্তরে তৃণমূল স্বীকার করে নেয় যে, নারদ কাণ্ডে টাকা নিয়েছেন দলের মন্ত্রী-বিধায়ক- সাংসদরা। কিন্তু তার পরেও শোভনবাবুর সুর যে বিশেষ বদলায়নি তা এ দিন পাথরপ্রতিমার ধ্রুববাজারের সভাতেই শোনা গিয়েছে। কিন্তু মঞ্চে হাজির দলীয় সাংসদ চৌধুরীমোহন জাটুয়া কর্মী-সমর্থকদের কাছে আর্জি জানান, তাঁরা যেন এ সব দেখে দূরে সরে যাবেন না। দল তো তদন্ত করছে।
প্রচার-সভার জন্য দক্ষিণ গঙ্গাধরপুর, শ্রীনারায়ণপুর, দক্ষিণ রায়পুর, দিগম্বরপুর এবং রামগঙ্গা – এই পাঁচটি অঞ্চল থেকে লোক এনেছিল তৃণমূল। তবু মাঠ পুরো ভরেনি। তৃণমূল নেতাদের দাবি, প্রচণ্ড রোদে সভা হয় বলেই কিছু লোক কম হয়েছে।