শাসককে রুখতে ভোটে জোটবদ্ধ ভাবে লড়াই করেছে মালদহের বাম কংগ্রেস নেতৃত্ব। এ বার শাসক দলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও জোটবদ্ধ হয়ে পথে নামল দুই দলের নেতৃত্বরা।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দিলেন জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম নূর, সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র সহ একাধিক নেতারা। এ দিনই ইংরেজবাজারের বালুচর এলাকায় গিয়ে দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, জেলা জুড়েই মানুষ জোটের পক্ষে রায় দিয়েছেন। মৌসমের কথায়, ‘‘আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালাচ্ছে শাসক দল। যার প্রতিবাদে এদিন যৌথভাবে জেলা পুলিশ প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেওয়া হল।’’ মৌসম বলেন, ‘‘মালদহ শহর থেকে শুরু করে জেলা জুড়েই আক্রান্ত হচ্ছেন আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা। ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার পর রাত থেকেই শুরু হয়েছে হামলা।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদর অম্বর মিত্রর বক্তব্য, তৃণমূল বুঝতে পেরেছে, মানুষ জোটের পক্ষে। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। ইংরেজবাজারে বেশ কিছু পরিবারের উপরে হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আইনি সাহায্যের দাবিতে এ দিন আমরা যৌথ ভাবে জেলা পুলিশ প্রশাসনের দারস্থ হয়েছি।’’
যদিও তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘ভোটের দিন আমাদের এক নেতার হাত পা ভেঙে দিয়েছে সিপিএম-কংগ্রেস জোট। ওই নেতা অনুপ সরকার চিকিৎসাধীন রয়েছেন কলকাতায়। সিপিএম-কংগ্রেস জোট এলাকায় অশান্তির পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। আমরাও জেলা পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।’’
ভোট মিটতেই রবিবার সন্ধে থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইংরেজবাজার সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা। ওই দিনই রাতে ইংরেজবাজারের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বালুচরের বাসিন্দা সুরেশ পাসওয়ান ও জয়প্রকাশ সাহার পরিবারের উপরে হামলা চালানো হয়। তাঁদের অভিযোগ, শাসকদলকে ভোট না দেওয়ায় হামলা করা হয়। ওই দিনই গাজলে জোটের পোলিং এজেন্ট সন্তোষ রায়কে মারধর করা হয়। তাতেও অভিযুক্ত সেই শাসক দলই। এ দিন মৌসম, সুজাপুরের কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র, আরএসপির জেলা সম্পাদক গৌতম গুপ্ত, সিপিআই-এর জেলা সম্পাদক তরুণ রায় সহ একাধিক বাম ও কংগ্রেস নেতা ইংরেজবাজারের বালুচরে আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন। তারপরে জোটবদ্ধ হয়ে দেখা করতে আসেন পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে। প্রথমে বাম কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা দেখা করেন জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী ও পরে পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজার সঙ্গে। তাঁদের দাবি, জেলা জুড়ে দলীয় কর্মী সমর্থকদের উপরে যে হামলা চলছে পুলিশ প্রশাসনকে তা রুখতে কড়া হাতে ব্যাবস্থা নিতে হবে। তা না হলে আগামীতে জেলা জুড়ে যৌথভাবে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বাম কংগ্রেস নেতৃত্বরা।