West Bengal

ভুল এড়াতে পরীক্ষা হবে প্রিসাইডিং অফিসারদের

প্রশিক্ষণের পরে আবার পরীক্ষার প্রয়োজন হচ্ছে কেন?

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:২৮
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে তাঁদের উপরেই। সেই কাজের জন্য এত দিন প্রশিক্ষণ নিলেই চলত। এ বার কিন্তু সেই প্রশিক্ষণের শেষে নির্বাচন কমিশনের কাছে রীতিমতো পরীক্ষাও দিতে হবে প্রিসাইডিং অফিসারদের। ভোট পরিচালনার যাবতীয় খুঁটিনাটি তাঁদের নখদর্পণে রয়েছে কি না, তারই পরীক্ষা নিতে চাইছে কমিশন। পরীক্ষা দিতে হবে রিটার্নিং অফিসারদেরও।

Advertisement

প্রশিক্ষণের পরে আবার পরীক্ষার প্রয়োজন হচ্ছে কেন? কমিশন-কর্তাদের ব্যাখ্যা, ভোটারদের কাছে প্রিসাইডিং অফিসারেরাই নির্বাচন কমিশনের মুখ। স্বচ্ছতার স্বার্থে আগের থেকে এ বারের ভোট পরিচালনার প্রক্রিয়া অনেক বেশি প্রযুক্তিনির্ভর হবে। তাই প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষা— দু’টি ব্যবস্থাই রাখতে হচ্ছে বলে জানান কমিশন কর্তারা।

প্রিসাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সামগ্রিক ভোট পরিচালনার খুঁটিনাটি বোঝানোর সঙ্গে সঙ্গে বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র বা ইভিএম ব্যবস্থাপনার উপরে বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। এ বারে ‘বুথ-অ্যাপ’ ব্যবহার করবে কমিশন। তাই সেই প্রযুক্তি সম্পর্কেও যথাযথ ভাবে অবহিত করানো হচ্ছে অফিসারদের।

Advertisement

‘বুথ-অ্যাপ’ কী? কমিশন জানিয়েছে, প্রিসাইডিং অফিসারদের কাছে থাকা মোবাইলে ওই অ্যাপ থাকবে। ভোটারদের সঙ্গে থাকা কিউ-আর কোড দেওয়া ভোটার স্লিপ ওই অ্যাপে স্ক্যান করা হবে। ফলে আলাদা ভাবে কাগজের নথি (এই অ্যাপের পাশাপাশি অবশ্য চালু কাগজের তালিকার পদ্ধতিও থাকবে বুথে) দেখে ভোটারের নাম মেলাতে হবে না। এতে এক দিকে সময় কম লাগবে, তেমনই ভুয়ো ভোটার চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। লাইনে ক’জন ভোটার দাঁড়িয়ে আছেন, নির্দিষ্ট সময় অন্তর কত ভোট পড়ছে— ভোট প্রক্রিয়ার সব তথ্য রিটার্নিং অফিসার, ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসার, কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তারা ওই অ্যাপ মারফত তৎক্ষণাৎ পেয়ে যাবেন।

প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া প্রিসাইডিং অফিসারদের একটি ওয়েবসাইট-লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে। ভোট পরিচালনার পদ্ধতি আয়ত্ত করতে সেই লিঙ্কে ক্লিক করে অনলাইনে যত বার খুশি অনুশীলন করা যাবে। প্রতি বারের অনুশীলনে ৪০টি করে প্রশ্ন দেওয়া থাকছে। ‘মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন’ পদ্ধতিতে প্রশ্নের ঠিক উত্তর চিহ্নিত করতে হচ্ছে। উত্তর ভুল হলে অনলাইনেই ঠিক উত্তর জেনে নিতে পারছেন অনুশীলনকারীরা। আবার উত্তর ঠিক হলে সেই বার্তাও পাচ্ছেন তাঁরা। প্রশিক্ষণ শেষে নির্ধারিত দিনে অনলাইনে পরীক্ষা নেবে কমিশন। ৩০ মিনিটে ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে প্রত্যেককে।

এক অফিসারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিষয়টি অত্যন্ত অভিনব। এ বার যে ভুলের অবকাশ থাকবে না, সেটা এখন থেকেই নানা ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে কমিশন। পরীক্ষায় পাশ-ফেল অন্য প্রশ্ন, কিন্তু নিজের তাগিদেই সব প্রশ্নের উত্তর জেনে নেওয়াটা জরুরি হয়ে গিয়েছে। আগের ভোটগুলিতে এই চাপ ছিল না।’’ কমিশনের অন্দরের বক্তব্য, ভোট পরিচালনার পাশাপাশি ভোটগ্রহণের শেষে কাগজপত্রের অনেক কাজ করতে হয় প্রিসাইডিং অফিসারদের। সেই কাজকর্মে কোথাও ভুল হলে গেলে তার মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে পুরো ভোট প্রক্রিয়ার উপরেই। তাই প্রশিক্ষণে কোনও রকম ফাঁকফোকর রাখা হচ্ছে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement