বৌমার নামে থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন শাশুড়ি। পরে সেই বৃদ্ধার মৃত্যু হল হাসপাতালে। ভোটের লাভপুরে এই ঘটনায় রাজনীতির রং লেগেছে। সিপিএমের দাবি, অভিযোগ জানাতে যাওয়া ওই বৃদ্ধাকে লাভপুর থানার ওসি দেবাশিস ঘোষ বলে দেন, তিনি সিপিএম সমর্থক হওয়ায় তাঁর অভিযোগ নেওয়া হবে না। বারবার বলাতেও কাজ না হওয়ায় পূর্ণিমা মণ্ডল (৬০) নামে ওই বৃদ্ধা ক্ষোভে হতাশায় থানা চত্বরেই বিষ খেয়ে নেন। বৃহস্পতিবার বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে তিনি মারা যান। সিপিএম নেতৃত্বের আরও দাবি, মৃত্যুর আগে তাঁদের সামনেই লিখিত অভিযোগে টিপসই দিয়ে যান ওই বৃদ্ধা। সেই অভিযোগ বিডিও-র কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রটি জেলা প্রশাসনের কাছে পৌঁছেছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। ঘটনাচক্রে এ দিনই কমিশন সরিয়ে দিয়েছে দেবাশিসবাবুকে। মৃতার বাড়ি লাভপুরের আরার গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক বছর আগে পূর্ণিমাদেবীর স্বামীর মৃত্যু হয়। একমাত্র ছেলে ও বউমার সংসারে থাকতেন। ছেলে কাজল ও তাঁর স্ত্রী মিঠু এলাকায় তৃণমূল সমর্থক হিসেবেই পরিচিত। অভিযোগ, বউমা তাঁর উপরে নির্যাতন চালাতেন। বুধবার নির্যাতন চরমে ওঠায় তিনি থানায় যান। সিপিএমের লাভপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক মানিক মণ্ডলের দাবি, হাসপাতালে বৃদ্ধা তাঁদের জানান, ওসি তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চান। বৃদ্ধা নিজেকে সিপিএম সমর্থক হিসেবে দাবি করেন। মানিকবাবুর দাবি, ওসি বৃদ্ধাকে বলেন, ‘সিপিএম যারা করে, তাদের বিচার হবে না।’ এর পরে ওই বৃদ্ধা বাড়ি থেকে আনা বিষ খান।
সূত্রের খবর, পুলিশ কর্মীরাই পূর্ণিমাদেবীকে প্রথমে লাভপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। সিপিএম নেতারা সেখানে যান। বৃদ্ধার ‘বক্তব্য’ অভিযোগ আকারে লেখার পরে তাতে তাঁর টিপছাপ নেওয়া হয়। অভিযোগপত্রটি বুধবার বিডিওর কাছে জমা দেওয়া হয়। বৃদ্ধাকে বোলপুর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ দিন সকালে তিনি মারা যান।
তৃণমূলের লাভপুর ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী দাবি, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। সিপিএম রাজনৈতিক রং দিতে নিজেরাই টিপ ছাপ দিয়ে ওই অভিযোগ বৃদ্ধার বলে চালাছে।’’ পূর্ণিমাদেবীর ছেলে ও বউমা অত্যাচারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘অশান্তি সব সংসারেই হয়। কিন্তু এমনটা যে হবে তা ভাবতে পারিনি।’’