অশান্ত শীতলখুচি। সেই দিনের দৃশ্য। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ নেওয়ার দিনেই রাজ্যপুলিশে বড়সড় রদবদল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বদল করা হয়েছে কোচবিহারের পুলিশ সুপারকেও। দেবাশিস ধরের জায়গায় ওই জেলার পুলিশ সুপার করা হয়েছে কে কান্নানকে।
ভোটের ঠিক আগে আগেই দেবাশিসকে কোচবিহারের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে পাঠানো হয়েছিল। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা শপথগ্রহণের পরেই রাজ্য পুলিশে একাধিক রদবদল করা হয়েছে। সেই তালিকায় দেবাশিসও। তাঁর জায়গায় কান্নানকে পাঠানো হচ্ছে। প্রসঙ্গত গত ১০ এপ্রিল রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটের দিন কোচবিহারের শীতলখুচি কেন্দ্রের জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। সেই সময় কোচবিহারের পুলিশ সুপার দাবি করেন, বাহিনী আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে। তাঁর বক্তব্য ছিল, প্রায় ৩০০ জনের একটি দল লাঠি এবং হাতে তৈরি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করে। পুলিশ সুপার আরও জানান, উত্তেজিত জনতা চড়াও হওয়ায় ইভিএম এবং আগ্নেয়াস্ত্র ছিনতাই হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালায়। সেই গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয় এবং একজন আহত হন। যদিও পরবর্তী কালে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সামনে আসার পর পুলিশ সুপারের ওই দাবি ঘিরে পাল্টা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
বিধানসভার ভোটে বিপুল ভাবে জয়ের পর দিনই শীতলখুচি কাণ্ডের কথা পরোক্ষে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। পুলিশকে রাজধর্ম পালনের পাশাপাশি কড়া বার্তা দেন কোচবিহারের পুলিশ সুপারকেও। বলেন, ‘‘কোচবিহারের এসপি বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। বিজেপি খুন, অত্যাচার করছে। সব থেকে বেশি অত্যাচার করছে কোচবিহারে। কেন্দ্রীয় বাহিনীও খুব অত্যাচার করেছে। সব দেখে নেব।’’ তার পরই কোচবিহারের পুলিশ সুপারকে বদলির নির্দেশ।
এ ছাড়াও রাজ্যের একাধিক জেলার পুলিশ সুপারকে বদলি করা হয়েছে। পুর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার করা হয়েছে ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কে। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার করা হয়েছে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এ ছাড়া হাওড়া, জঙ্গিপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ দিনাজপুর-সহ একাধিক জেলার পুলিশ সুপার এবং পুলিশ আধিকারিক বদল করা হয়েছে।