বাহিনীকে বশে রাখতে মদ-মাংস

দ্বিতীয় দফা ভোটের আগেও বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ সেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘিরেই। অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন পশ্চিম মেদিনীপুরের কোথাও মদ- মাংস খাইয়ে বাহিনীকে বশ করছে, কোথাও আবার বাহিনীকে বশ করে মাফিয়া নামিয়ে ভোট লুঠের ছক কষছে। আজ, সোমবার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মদ-মাংস খাওয়ানো নিয়ে কেশপুর থেকে সিপিএমের তরফে অভিযোগও জানানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৬ ০০:৫৭
Share:

দ্বিতীয় দফা ভোটের আগেও বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ সেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘিরেই। অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন পশ্চিম মেদিনীপুরের কোথাও মদ- মাংস খাইয়ে বাহিনীকে বশ করছে, কোথাও আবার বাহিনীকে বশ করে মাফিয়া নামিয়ে ভোট লুঠের ছক কষছে। আজ, সোমবার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মদ-মাংস খাওয়ানো নিয়ে কেশপুর থেকে সিপিএমের তরফে অভিযোগও জানানো হয়েছে।

Advertisement

সিপিএমের কেশপুর জোনাল সম্পাদক মানিক সেনগুপ্ত বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীর খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করছে তৃণমূলের লোকজন। রবিবার থেকেই ঢালাও মদ- মাংসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ তাঁর আশঙ্কা, কেশপুরে ভোটের নামে প্রহসন হতে চলেছে। কেশপুরের পর্যবেক্ষক এস সুহেল আলি অবশ্য বলেন, “এ রকম অভিযোগ পাইনি।’’

খড়্গপুর শহরে আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বশ করে মাফিয়াদের কাজে লাগিয়ে তৃণমূল ভোট লুঠের ছক কষছে বলে আশঙ্কা করছে বিরোধীরা। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতেই জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ‘বহিরাগত’ তৃণমূল কর্মীরা চলে আসবে। তাঁরাই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ‘ম্যানেজ’ করবে। আর সেই ফাঁকে বুথে ঢুকে কাজ সেরে দেবে মাফিয়ারা। এক যুব তৃণমূল কর্মীর কথায়, “প্রথমে ঠান্ডা জল দিয়ে শুরু। তার পর তরমুজ, ডাবের জল। মোদ্দা কথা খাওয়া-দাওয়ায় মজিয়ে দিতে পারলেই তো হল।” আর বুথের ভিতরে? “এ জন্য তো স্থানীয়রা আছে। বন্দুক আর টাকার কাছে বিরোধী এজেন্টও বিক্রি হয়ে যাবে।”—বলছিলেন ওই যুব তৃণমূল কর্মী। খড়্গপুরের রেল ওয়ার্ড ও পাঁচবেড়িয়া এলাকার বেশ কয়েকটি বুথে এমনই আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

কেশিয়াড়ি, ডেবরা, পিংলা, খড়্গপুর গ্রামীণ বিধানসভা এলাকাতেও তৃণমূলের শাসানি চলছে বলে অভিযোগ। রবিবার কংগ্রেস ভোট লুঠ হতে পারে বলে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে। তাঁদের দাবি, খড়্গপুর শহরের ১৩, ১৫ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং পাঁচবেড়িয়ার বেশ কিছু এলাকায় রিগিং হতে পারে। কংগ্রেস প্রার্থী জ্ঞানসিংহ সোহন পালের নির্বাচনী এজেন্ট রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “২৮টি বুথে আমরা ভোট লুঠের আশঙ্কা করে কমিশনে জানিয়েছি। সেখানে মাফিয়া দিয়ে ভোট লুঠ করা হতে পারে।” সিপিএমের জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডলেরও বক্তব্য, “নিউ সেটেলমেন্ট, নিমপুরার মতো এলাকায় সন্ত্রাস চলছে। যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী বসে যায় তবে পুরভোটের মতোই বুথ দখল হবে।” আশঙ্কায় বিজেপিও। দলের জেলা সহ-সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝাঁ বলেন, “খড়্গপুর শহরে এই পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা চোখে পড়েনি। এজন্য আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিষ্ক্রিয় থাকলে মাফিরা ভোট লুঠ করবে।”

খড়্গপুরের তৃণমূল প্রার্থী রমাপ্রসাদ তিওয়ারির অবশ্য বক্তব্য, “নির্বাচন শান্তিপূর্ন হবে। যেখানে মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে সেখানে আমরা নোংরা রাজনীতি করব কেন?” অবাধ-সুষ্ঠু ভোটের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসনও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement