পর্যবেক্ষকরা ফোনই ধরছেন না, কমিশনে অভিযোগ সিপিএমের

যাঁদের নিয়ে এত দিন ভরসা ছিল, নির্বাচন কমিশনের সেই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা ফোনই ধরছেন না। প্রায়ই মোবাইল বন্ধ করে রাখছেন। দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগেই মুখ্য নির্বাচন নসীম জৈদীর কাছে অভিযোগ জানাল সিপিএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৬ ১৯:৫৪
Share:

যাঁদের নিয়ে এত দিন ভরসা ছিল, নির্বাচন কমিশনের সেই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা ফোনই ধরছেন না। প্রায়ই মোবাইল বন্ধ করে রাখছেন। দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগেই মুখ্য নির্বাচন নসীম জৈদীর কাছে অভিযোগ জানাল সিপিএম। দলের অভিযোগ, ভোটারদের মনোবল বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যে ভাবে নিয়োগ করার দরকার ছিল, তা-ও হয়নি। নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে তাদের।

Advertisement

সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে গণ্ডগোলের খবর আসছিল। আজ তাই বিকেলে ভোটগ্রহণ শেষেই আলিমুদ্দিনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে নীলোৎপল বসু বৈঠক করেন জৈদীর সঙ্গে। অভিযোগ তোলেন, বহু জায়গায় হিংসা হয়েছে। ভোটারদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। বুথে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পোলিং এজেন্টদের উপর হামলা হয়েছে। এমনকী, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকেও তাঁর নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে হেনস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, দাঁতনে পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। অভিযোগ, তাঁদের মোবাইলে পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেলেও সাড়া মেলেনি। সেক্টর অফিসাররা নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেও এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে এড়িয়ে গিয়েছেন।

নীলোৎপলবাবু বলেন, ‘‘অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সূর্যবাবুকে ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল। তৃণমূলের এক জন, যার নিজের পরিচয়পত্র নেই, সে সূর্যকান্ত মিশ্রর পরিচয়পত্র দেখতে চাইছে। এক জায়গায় তৃণমূল নেতা সোহরাব আলিকে বুথের ভিতর দেখা গিয়েছে। তিনি সেখানকার ভোটার বা প্রার্থী নন। প্রিসাইডিং অফিসার কিছুই করতে পারেননি। বিরোধী দলের এজেন্টদের উপরে হামলা হয়েছে।’’

Advertisement

সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, আজ যে ভাবে ভোট হয়েছে, তার পরে তাঁরা বেশ কিছু কেন্দ্রে ফের ভোটগ্রহণের দাবি জানাবেন কমিশনের কাছে। পরে সেই তালিকা কমিশনকে দেওয়া হবে। তবে অবাধ নির্বাচন না হলে নির্বাচন কমিশনকে যে তার দায় নিতেই হবে, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন সিপিএম নেতারা। নীলোৎপলবাবুর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের অফিসাররা কমিশনের হয়ে ডেপুটেশনে কাজ করেছেন। ফলে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ নিরপেক্ষ কাজ করছে না। কিন্তু নির্বাচন অবাধ না হলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকেই সামগ্রিক ভাবে দায় নিতে হবে।’’ জৈদীর কাছে তাঁর অভিযোগ, কমিশন প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোটের আগের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এলাকরায় টহলদারির কাজে ব্যবহার করা হয়নি। আজ কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই হিংসা, হামলা হয়েছে।

সিপিএমের অবিযোগ অনুযায়ী, কেশপুরের ১১০টি বুথে শুরু থেকেই সিপিএম পোলিং এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি। তৃণমূলের বাইক বাহিনী দাপিয়ে বেড়িয়েছে। দুপুর দেড়টার মধ্যেই ১৪৬টি বুথ দখল হয়ে যায়। চন্দ্রকোণাতেও ৬০টি বুথে ভোটারদের উপর হামলা হয়েছে। গড়বেতার ১০৯টি বুথে বিরোধী দলের এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি। গ্রামবাসীদের ঘরেই আটকে রাখা হয়। খড়গপুরে সিপিএণ প্রার্থী শাজাহান আলি যেখানেই গিয়েছেন, তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে ঘিরে রেখেছে। বাধ্য হয়ে তাঁকে পার্টি অফিসেই বসে থাকতে হয়। পিংলায় ১৪টি বুথ দখল হয়েছে। ঘাটালে ৩৪টি বুথে হিংসা হয়েছে। সবং, নারায়ণগড়, কেশিয়ারি থেকেও হিংসাত্মক হামলার খবর এসেছে। বাণকুড়ার সোনামুখী, বর্ধমানের জামুরিয়া, দুর্গাপুর-পূর্ব থেকেও তৃণমূলের হিংসার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে সিপিএম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement