পুজো আচ্চা চিরকালই করেন। নবরাত্রির সময় দীর্ঘ উপবাসেও তিনি অভ্যস্ত। সে সময় বিদেশে গিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে নৈশভোজে শুধু ফলের রস খেয়ে কাটিয়েছেন। কিন্তু এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গন্তব্য অসমের কামাখ্যা মন্দির। কাল তিনি অসমে যাচ্ছেন ভোট প্রচারে। সেখানে গিয়ে কামাখ্যা মন্দিরে শক্তির উপাসনা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানা গিয়েছে, পঞ্জিকা মতে কাল বিশেষ শুভ দিন। নবরাত্রি শুরু হচ্ছে। সে দিন শক্তি পুজোর জন্য তিনি আজ থেকেই উপবাস শুরু করছেন।
বিরোধীপক্ষ অবশ্য বলছেন, ভোটের সময় সচেতন ভাবেই কামাখ্যা মন্দিরে পুজো করে ভোটারদের মধ্যে ধর্মীয় মেরুকরণ চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে কংগ্রেসের পক্ষে প্রকাশ্যে মোদীর কামাখ্যায় আরাধনার বিরোধিতা করাও কঠিন।
শুধু নরেন্দ্র মোদী নন, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও অসমের নির্বাচনী প্রচার শুরু করার সময় কামাখ্যা মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। বিজেপি নেতারা বলছেন, কামাখ্যা মন্দিরে যাওয়া নিয়ে এত আলোচনার তো কিছু নেই। কলকাতায় গিয়ে কালীঘাট বা দক্ষিণেশ্বরে যাওয়ার মতই এটা একটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানা যাচ্ছে— আজ নয়, বহু দিন ধরেই অমিত শাহ কামাখ্যার উপাসক। গোধরার দাঙ্গার পর আদালতের নির্দেশে যখন অমিত শাহ গুজরাতের বাইরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন, তখন এই কামাখ্যা মন্দির থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে অবস্থিত আদি শঙ্করাচার্যেোর আশ্রমে সস্ত্রীক থাকতেন তিনি। সেই সময় অমিত শাহ দীর্ঘ প্রায় ২৫ দিন কামাখ্যা মায়ের মন্দিরে ব্রত করে উপবাস করেছিলেন। সেই সময় তিনি শুধু ফলাহার করতেন।
অসমের রাজনীতি এখন উত্তাল। এক দিকে প্রধানমন্ত্রী বিকাশ এবং উন্নয়নের কথা বললেও বিজেপি শেষ পর্যন্ত ধর্মীয় মেরুকরণের ফায়দা তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। সংখ্যালঘু ভোট বদরুদ্দিন আজমলের এআইউডিএফ-এর কাছে যাবে নাকি কংগ্রেসের দিকে যাবে, সেটা নিয়েও চলছে বিতর্ক। ভোটের আগে জোট না হলেও এই মুসলিম রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কংগ্রেস যোগাযোগ রাখছে। অসমে শেষ দফা ভোট ১১ এপ্রিল।
সেই শেষ দফা ভোটের আগে আগামিকাল নরেন্দ্র মোদীর কামাখ্যা দর্শন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। পৌরাণিক ভাবে কামাখ্যার একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কথিত রয়েছে এ’টি সতীর যোনিপীঠ। এখানে সাড়ম্বরে যে অম্বুবাচী উৎসব হয়, সেখানে শুধু শাক্ত নয়, আসেন বৈষ্ণব বাউলরাও। গুজরাতি তীর্থযাত্রীদের ভিড়ও হয় বিপুল।