ভার্চুয়াল সভায় মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের হাতে এই মুহূর্তে ২০ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী কয়েকদিনে এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, করোনা সংক্রমণের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতেও কেন্দ্র রাজ্যের সঙ্গে দুয়োরানির মতো আচরণ করছে। অক্সিজেনের এই সঙ্কটকালেও রাজ্যে তৈরি হওয়া অক্সিজেন রাজ্যের বাইরে পাঠানোর নির্দেশ দিচ্ছে কেন্দ্র। তা বরাদ্দ করছে অন্য রাজ্যের জন্য। যদিও বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি, এসব আসলে নির্বাচনী গিমিক। মিথ্যা বলে প্রচার চালানো হচ্ছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার আসানসোলে ভার্চুয়াল জনসভা ছিল মমতার। সেখানেই রাজ্যের হাতে এই মুহূর্তে কত অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে তার হিসেব দেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যের হাতে এর আগে ১৫ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল। গত কাল রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে তৈরি অক্সিজেনকে আমাদের চিকিৎসার কাজে লাগানোর জন্য আনানো হয়েছে। মোট ৫ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করতে পেরেছি আমরা। এখন আমারদের হাতে ২০ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে।’’ আগামী দু’-একদিনে যাতে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে রাজ্য কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলছে বলেও জানিয়েছেন মমতা। তবে তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে অক্সিজেন ঘাটতির এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে কেন্দ্র বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে।
শুক্রবার তৃণমূলের তরফে এ সংক্রান্ত একটি প্রেস বিবৃতিও জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের স্বাস্থ্য ও পরিবার দফতর রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে তৈরি ২০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন রাজ্যের বাইরে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। অথচ রাজ্যে যে গতিতে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে আগামী কয়েক সপ্তাহে প্রতিদিন ৪৫০ মেট্রিক টন করে অক্সিজেন সরবরাহের প্রয়োজন পড়বে রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে তৈরি হওয়া অক্সিজেন অন্যত্র পাঠালে সঙ্কট বাড়তে পারে রাজ্যে।
এ নিয়ে ভার্চুয়াল সভা থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে মমতার মন্তব্য, ‘‘আমাদের অক্সিজেন সরবরাহ করত যে সেল, কেন্দ্র তাদের ইউপি (উত্তরপ্রদেশ)-তে পাঠিয়ে দিয়েছে। বাংলার বাজারে ওষুধ নেই, অক্সিজেন নেই। আর ওরা বাংলার অক্সিজেন অন্য রাজ্যে নিয়ে যাচ্ছে?’’ মমতার কথায়, ‘‘বাংলার অক্সিজেন অন্যত্র যাবে কেন? বাংলা কি ভিখিরি না দুয়োরানি যে আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হবে। আমি এব্যাপারে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছি। তাতে বলেছি, বাংলার অক্সিজেন অন্য জায়গায় পাঠানো যাবে না।’’
মমতার এই অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন, পুরোটাই নির্বাচনী গিমিক। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মিথ্যে কথা বলে অভিযোগ আনা হচ্ছে। অন্যদিকে, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, দেশের এই করোনা পরিস্থিতিতেও যে টিকা থেকে শুরু করে অক্সিজেন সরবরাহ সবই কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করছে তার ভূরি ভূরি প্রমাণ রয়েছে হাতে। তৃণমূলের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র এবং নির্বাচন কমিশনের অবহেলার কারণেই আট দফা নির্বাচন করতে গিয়ে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।’’