বাম-কংগ্রেস জোটের ব্রিগেড সমাবেশের পিছনে তৃণমূলের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করল রাজ্য বিজেপি। শুধু তাই নয়, এর পিছনে আগামী দিনে রাজ্য সরকারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আব্বাস সিদ্দিকিকে তুলে ধরার চেষ্টাও তৃণমূলের পক্ষে রয়েছে বলে দাবি করেন রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তবে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। বরং, শমীককে মনোবিদের কাছে গিয়ে চিকিৎসা করানোর নিদান দিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
রবিবার ব্রিগেড সমাবেশের শেষে শমীক বলেন, ‘‘এটা বাম-কংগ্রেসের সমাবেশ ছিল না। এটা তৃণমূলের অনুপ্রেরণায় এবং মহম্মদ সেলিমের প্রযোজনায় ভাইজানের ব্রিগেড। সেই ব্রিগেডে কংগ্রেস আর সিপিএম যোগ দিয়েছে।’’ এই বক্তব্যের পাশাপাশি তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন শমীক। তিনি বলেন, ‘‘১৯৪৬ সালে এই রকমই সভায় গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং-এর নায়ক সুরাবর্দীর সঙ্গে জ্যোতি বসু ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, উনি নাকি সভাটা দেখতে গিয়েছিলেন। আজকে বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসুর উপস্থিতিতে মঞ্চে আব্বাস সিদ্দিকি। এতে প্রমাণ হল কমিউনিস্টদের সেই পরম্পরা সমানে চলছে। সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি থেকে তারা দূরে সরে আসতে পারেনি। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কাছে নির্লজ্জ আত্মসমর্পণ।’’
বামেদের আক্রমণের পাশাপাশি শমীক তৃণমূলকে বিঁধে বলেন, ‘‘সিপিএম এবং কংগ্রেসের ঘাড়ে বন্দুক রেখে নীরব ও সর্বাত্মক সহযোগিতা ছিল তৃণমূলের। সিদ্দিকিকে কিছু আসন পাইয়ে দিয়ে তাঁকেই বাংলার উপ-মুখ্যমন্ত্রী করার ছক চলছে। পরবর্তীকালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে এটা শিয়রে সমন কি না, সেটা তাঁরাই বিবেচনা করবেন। মানুষ দেখেছেন আজকের সমাবেশ।’’
এই অভিযোগের জবাবে কুণাল বলেন, ‘‘ভাল চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার শমীক ভট্টাচার্যের। জানি তৎকাল বিজেপির চাপে বিজেপি-র আদি নেতারা তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন। তবে এমন ভারসাম্যহীন কথা বলার পরে মনোরোগীর কাছে যাওয়া প্রয়োজন।’’ তৃণমূলও রবিবার আব্বাসের দলকে সাম্প্রদায়িক বলেই আখ্যা দিয়েছে। দলের আর এক মুখপাত্র তথা মন্ত্রী তাপস রায় বলেন, ‘‘ভোটের ক’দিন আগে একটি ধর্মীয় সংগঠন থেকে বেরিয়ে এসে রাজনৈতিক দল তৈরি করা হয়েছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট নামে। কিন্তু সেকুলার নাম দিলেই তো আর কেউ ধর্ম নিরপেক্ষ হয়ে যায় না। আমাদের রবীন্দ্র-নজরুলের বাংলায় হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে কোনও সাম্প্রদায়িক বিভাজনের স্থান নেই। একটি মৌলবাদী শক্তিকে নিয়ে আজ সিপিএম ও কংগ্রেস ব্রিগেড সমাবেশে হাজির করল।’’ এটা অত্যন্ত দুঃখের বলে দাবি করে তাপস আরও বলেন, ‘‘জাতীয় স্তরে কংগ্রেস ব্যর্থ, সিপিএমের ভ্রান্ত নীতির কারণেই এই সব শক্তির হাত ধরতে হয়েছে। তাই দেশে কাপালিক শক্তির উত্থান হয়েছে। আর তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মঞ্চে তুলে আব্বাসের হাত ধরে একই মঞ্চে কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের নেতারা সমাবেশ করছেন, এই ঘটনা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক।’’