ভোটের সময় ফাঁকা থাকতে পারে দিঘা। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটে অশান্তি ঠেকাতে তত্পর নির্বাচন কমিশন। সম্ভাব্য সব রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যাতে কোনও ফাঁক না থাকে সে জন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও থাকছে বাড়তি নজরাদারিও। তবে সতর্কতার জেরে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
পূর্ব মেদিনীপুরে প্রথম দু’দফায় আগামী ২৭ মার্চ এবং ১ এপ্রিল ভোট। প্রশাসন সূত্রে খবর ওই সময় বহিরাগতদের প্রবেশ আটকাতে পর্যটন কেন্দ্রগুলি পুরোপুরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। যা শুনে মাথায় হাত হোটেল ব্যবসায়ীদের।
বছরের এই সময়টায় দোলকে কেন্দ্র করে বসন্তের আমেজ গায়ে মেখে সুযোগ মতো কয়েকটা দিন ছুটি কাটাতে বেরিয়ে পড়ে বাঙালিরা। পছন্দের শীর্ষে থাকে দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুরের মতো জায়গা। ইতিমধ্যে হোটেল বুকিংও করে রেখেছেন অনেকে। বহু হোটেলে মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের শুরুর দিক পর্যন্ত বুকিং ভর্তি। কমিশনের নির্দেশে যদি ভোটকে কেন্দ্র করে হোটেল বন্ধ রাখতে হয়, তবে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। লকডাউনের জেরে এমনিতেই ব্যবসা বন্ধ ছিল। ভোটের জন্য ফের এই ভরা সিজনে যদি হোটেল বন্ধ রাখতে হয়, ক্ষতির দিকটাই ভাবাচ্ছে ব্যাবসায়ীদের। প্রশাসনিক ভাবে এখনও নোটিস জারি না হলেও দিঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র বলেন, ‘‘লকডাইনের পর এখন ব্যবসা কিছুটা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। দিঘায় ১ হাজারের বেশি হোটেলে বছরের এই সময়টা উপচে পড়া ভিড় থাকে। এমন পরিস্থিতিতে পর্যটনের সঙ্গে জড়িতদের কথা ভেবে প্রশাসনকে নমনীয় হওয়ার আবেদন জানাব।’’
প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের খবর কার্যত হতাশ হোটেল ব্যবসায়ীরা। দিঘার এক হোটেল মালিক পরমেশ চন্দ বলেন, ‘‘দোলকে কেন্দ্র করে প্রায় ২ মাস আগে থেকেই দিঘার হোটেলগুলি বুক হয়ে গিয়েছে। ২৭ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত টানা ছুটি। পাশাপাশি বাংলা বছর শেষের ছুটি কাটাতে বহু মানুষ দিঘায় বেড়াতে আসেন। কিন্তু প্রশাসন যদি নির্বাচনের জন্য দিঘা বন্ধ করে দেয় তাহলে কয়েক কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়বেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।’’
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে নজির বিহীন নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা জেলাকে। এই মুহূর্তে জেলায় রয়েছে ৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ৮ মার্চ আরও প্রায় ৩৫ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হবে পূর্ব মেদিনীপুরে। জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘নির্বাচনে কোনও রকম ঝামেলা যাতে না হয় সে দিকে কড়া নজর রাখছে প্রশাসন। সে ক্ষেত্রে প্রথম ২ দফার নির্বাচনের সময় বহিরাগতরা যাতে হোটেলে না থাকেন সে দিকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশনের তরফে এখনও কোনও নির্দেশিকা আসেনি।’’ দিঘা-সহ সমস্ত হোটেলগুলির ক্ষেত্রে কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, বাইরে থেকে কেউ ঢুকে যাতে অশান্তি তৈরি করতে না পারেন তার জন্য ইতিমধ্যে জেলার সীমানায় ৫৫টি নাকা চেকিং পয়েন্ট বসানো হয়েছে। যার মধ্যে ওড়িশা সীমান্তে ৫টি নাকা রয়েছে। সব দিকে সতর্ক নজর রাখছে প্রশাসন।