ভোটের মুখে ভয়

ভোট যেতে এগিয়ে আসছে, কোচবিহারে সন্ত্রাসের অভিযোগও বাড়ছে। সন্ধ্যা হলেই কোথাও টহল দিচ্ছে বাইক বাহিনী। বিরোধী দলের ভোট প্রচারে অংশ নিলে প্রথমে হুমকি, কথা না শুনলে পরে মারধরও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৬ ০২:৩৬
Share:

কোচবিহারে তৃণমূলের বাইক মিছিল। ফাইল চিত্র।

ভোট যেতে এগিয়ে আসছে, কোচবিহারে সন্ত্রাসের অভিযোগও বাড়ছে। সন্ধ্যা হলেই কোথাও টহল দিচ্ছে বাইক বাহিনী। বিরোধী দলের ভোট প্রচারে অংশ নিলে প্রথমে হুমকি, কথা না শুনলে পরে মারধরও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।শাসকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে কোথাও কোথাও প্রচারেও যেতে পাচ্ছেন না বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকেরা। শাসক দল তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মনগড়া অভিযোগ বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, “সব জায়গায় টহলদারি রয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

Advertisement

বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা তথা কোচবিহার জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণদলীর সদস্য তারাপদ বর্মন অভিযোগ করেন, দিনহাটা বিধানসভার বুড়িরহাটের একটি অংশে প্রচার করতে দিচ্ছে না তৃণমূল। সেখানে সশস্ত্র অবস্থায় শাসক দলের কর্মী-সমর্থকরা ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, “এই সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। আমরা ইতিমধ্যেই তা নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছি।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কোথাও কোনও সন্ত্রাস নেই। মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। বিরোধীরা প্রচারে মানুষ না পেয়ে মিথ্যের আশ্রয় নিয়েছেন।”

গত কয়েকদিন ধরে অবশ্য একের পর এক সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠতে শুরু করে কোচবিহারে। সোমবারই দিনহাটার সাবেক ছিটমহলে গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসক দলের নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে। ভোট না পেলে ‘খুন করা হবে’, ‘বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে’ বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় কমিটির নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত নির্বাচন কমিশনে ওই অভিযোগ জানান। দিন কয়েক আগে ওই বিধানসভার মর্নেইয়াতে এক প্রতিবন্ধীকে বিরোধী জোট প্রার্থী অক্ষয় ঠাকুরের হয়ে প্রচারে যাওয়ায় মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় পুলিশ কয়েকজন তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করে। শুধু তাই নয়, গ্রামে গ্রামে কেউ যাতে বিরোধী দলের হয়ে প্রচারে বা মিটিংয়ে না থাকে সে জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের জোট প্রার্থী তমসের আলি বলেন, “আমি যেখানে মিটিঙয়ে যাই। চারদিক দিয়ে শাসক দলের বাইক বাহিনী ঘুরে বেড়ায়। আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু ওভাবে আমাদের ভয় দেখানো যাবে না।” অক্ষয়বাবুও বলেন, “আর কোনও উপায় না দেখে এখন ভয় দেখানোর রাস্তা নিয়েছে তৃণমূল। তাঁরা বুঝে গিয়েছে মানুষ ভোট দিলে আর জেতা সম্ভব নয়। তাই মানুষকে ভোট দিতে আটকাতে হবে। সে চেষ্টায় করে যাচ্ছে। মানুষকে এবারে আটকাতে পারবে না।”

Advertisement

শীতলখুচি ও সিতাইয়ে বিরোধী দলের ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিরোধী দলের কোনও মিটিঙয়ে কেউ গেলেই তাঁকে ভোটের পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করছেন বিরোধীরা। শাসক দলের এক জেলা নেতা অবশ্য বলেন, “কমিশন চারদিকে নজর রাখছে। প্রচুর বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এই অবস্থায় সন্ত্রাসের অভিযোগ কেউ বিশ্বাস করবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement