কাগজে চোখ রমা বিশ্বাসের। ডান দিকে, ল্যাপটপে ব্যস্ত আবীররঞ্জন বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
ছোট্ট দু’কামরার বাড়ি। চারপাশটা ঘিরে আছে নানা ধরনের গাছগাছালি। ছোট থেকেই ফুল গাছের শখ রানাঘাট (দক্ষিণ) কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী রমা বিশ্বাসের। প্রতিটি গাছ যেন তাঁর আত্মীয়। ভোটের সময় কিছুটা হলেও গাছেদের যত্নে ঘাটতি হয়েছে। এখন তাই আরও বেশি করে সময় দিচ্ছেন তিনি। রমাদেবী বলছেন, ‘‘জানেন, ভোটের মধ্যে ক্যামেলিয়াটা মারাই গেল। টবটার সামনে এলেই মনটা টনটন করে ওঠে।’’
প্রতিদিন সকালে উঠেই গাছেদের ভিড়ে মিশে যান তিনি। আটটা নাগাদ দলের মুখপত্র চলে আসে। তারপর একাধিক বাংলা ও ইংরেজি সংবাদপত্র। সে সব শেষ করে রান্না বসাতে হয়। ছেলে স্কুল শিক্ষক। তাঁর খাওয়ার প্রস্তুতি সেরে ফেলতে হয় দ্রুত। সংসারের টুকিটাকি কাজ সামলে নিজেও তৈরি হন। তিনি দলের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর পাশাপাশি মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও বটে।
প্রথমেই তিনি চলে যান সোজা দলের জেলা কার্যালয়ে। সংগঠনের কাজে তাঁকে প্রায়ই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছুটতে হয়। সে সব না থাকলে দুপুরটা নানা কাজে দলীয় কার্যালয়ে কাটে। সেখান থেকে সোজা মহিলা সমিতির কার্যালয়ে। এর মধ্যে মিছিল-মিটিং তো আছেই। ফিরতে ফিরতে সেই রাত। ভোটের কথা মনে থাকে না? প্রসঙ্গটা তুলতেই রমাদেবী বলেন, ‘‘নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া দলীয় কর্মসূচির একটা অঙ্গ। ফলে সেটা নিয়ে আলাদা করে কিছু ভাবি না।’’
এ দিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের আবীররঞ্জন বিশ্বাস কুম্ভমেলা ও অমরনাথ যাত্রা নিয়ে মেতে রয়েছেন। এমনতিই তাঁর ঘুমোতে অনেক রাত হয়। আবার উঠেও পড়েন তাড়াতাড়ি। সাতসকালেই বাড়িতে চলে আসেন দলের নেতাকর্মীরা। নানা অভিযোগ শুনে তাঁদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে হয়। এ সবের মধ্যেও তাঁর মাথায় ঘুরছে ১৯ মে। কাউন্টিং এজেন্ট কে থাকবে তা নিয়েও চলছে বিস্তর আলোচনা।
টেনশন হচ্ছে? প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে আবীরবাবু বলছেন, ‘‘আমি ধর্মপ্রাণ মানুষ। ভোটের মধ্যেও তাই তীর্থ যাত্রার বিষয়টাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। গত বছর অমরনাথ যাত্রায় গিয়ে প্রায় ১৭ কেজি ওজন কমিয়ে এসেছি। এ বারেও যাব।’’