ফাইল চিত্র।
ভোটের কাজে এ বছর অনেক বেশি কর্মী-অফিসার লাগবে। তাই প্রতিটি দফতরকেই কর্মী-অফিসারদের তালিকা পাঠাতে বলেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু যাঁরা ভোটের দায়িত্ব পাচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই নানা ধরনের উচ্চ পদে কর্মরত। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, রীতি অনুযায়ী, ভোটে তাঁদের প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে কাজ করার কথাই নয়। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ-বিস্ময় বাড়ছে। বিষয়টি অস্বীকার করেনি নির্বাচন কমিশন। তবে তাদের দাবি, তালিকা তৈরির সময় পদমর্যাদা উল্লেখ না করে দেওয়ার কারণেই এই বিভ্রাট হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাজ্যের এক আইএএস অফিসার, যিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের প্রধান সচিব, আসন্ন ভোটে তাঁর প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পড়েছে। আরও তাৎপর্যপূর্ণ, সাহা ইনস্টিটিউটের একাধিক বিজ্ঞানীকেও প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এমনকি, দক্ষিণ কলকাতার এক রিটার্নিং অফিসার (ব্লক স্তরে বিডিও, মহকুমা স্তরে এসডিওরা ব্লক বা মহকুমা স্তরের ভোট পরিচালনা করেন) পেয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসারের (যিনি ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকেন) দায়িত্ব। সেই তালিকায় রয়েছেন সরকারের বিভিন্ন দফতরের উপসচিব এমনকি, অধিকর্তারাও। প্রশাসনিক সূত্রের ব্যাখ্যা, দফতরের প্রধান সচিবকে নিজের রাজ্যের ভোটকেন্দ্রে কোনও দায়িত্ব দেওয়ার কথাই নয়। সাধারণত যুগ্ম সচিব বা অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার অফিসারদের অন্য রাজ্যে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। রীতি অনুযায়ী, বিজ্ঞানীদেরও নির্বাচনের কাজে জড়ানো হয় না।
যদিও রাজ্যের মুখ্য কমিশন সূত্রের ব্যাখ্যা, ভোটের কাজে প্রস্তাবিত কর্মী-অফিসারদের নামের তালিকা বিভিন্ন দফতরকে তৈরি করতে বলা হয়েছিল। নির্দিষ্ট ফর্ম্যাটে প্রত্যেক কর্মী-অফিসারের তথ্য দিতে হয়েছে। সেই তালিকা পেয়েই কমিশনের কর্মী-আধিকারিকেরা ভোট-দায়িত্ব বণ্টন করেছেন। ফর্ম্যাটে একটি ‘রিমার্কস’ কলাম ছিল, যেখানে প্রত্যেকের পদমর্যাদা দেওয়ার কথা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সেই কলামে পদমর্যাদার উল্লেখ ছিল না। এক কর্তার কথায়, ‘‘র্যান্ডামাইজেশন-এর মাধ্যমে ভোট-ডিউটি দেওয়া হয়েছে। ‘রিমার্কস’ কলামগুলিও যথাযথ ভাবে ব্যবহার করা হলে সমস্যা হত না।’’ কোভিড পরিস্থিতিতে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ২২,৮৮৭টি বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১ লক্ষ ১ হাজার ৭৯০টি। অতিরিক্ত ভোটকেন্দ্রের জন্য বাড়তি ভোটকর্মী প্রয়োজন। ‘রিজার্ভ’ রাখতে হবে ২০ শতাংশের মতো কর্মীকে। ফলে প্রায় ৬ লক্ষ ভোটকর্মীর প্রয়োজন।