জামুড়িয়ায় সিপিএমের কার্যালয় দখলের অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
কোথাও বাড়িতে ভাঙচুর, কোথাও বা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে মারধর— সোমবারও জেলা জুড়ে ভোট পরবর্তী হিংসা থামার কোনও লক্ষণ নেই।
রবিবার রাতে মন্তেশ্বরের সিংহজুলি গ্রামের বাসিন্দা ফাল্গুনী রায় নামে এক সিপিএম নেতার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চলে বলে অভিযোগ। ফাল্গুনীবাবুক মেয়ের দাবি, ওই রাতে তৃণমূলের প্রায় জনা পঞ্চাশেক কর্মী আগ্নেয়াস্ত্র-সহ বাড়িতে চড়াও হয়। চলে ব্যাপক মারধর। পরে পুলিশ এসে ফাল্গুনীবাবু ও তাঁর ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে এলাকায় অশান্তির ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ফাল্গুনীবাবু ও তাঁর ছেলেকে। সোমবার সকালে ধৃতদের আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, ভোটের পর থেকেই পিয়া, বারারি, কুসুমগ্রাম, রায়গ্রাম, বিজুর, মেমারি প্রভৃতি এলাকায় লাগাতার সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে মন্তেশ্বরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সজল পাঁজা দাবি করেন, ‘‘ফাল্গুনীবাবু দলবল নিয়ে আমাদের গ্রাম কমিটির সভাপতির বাড়িতে হামলা চালান।’’
হামলার মুখে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্বও। রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে মঙ্গলকোটের চানক এলাকার তৃণমূল নেতা জয়ন্ত রায় ও খোকন শেখের উপরে কয়েকজন ধারালো অস্ত্র-সহ চড়াও হয়। তাঁদের মঙ্গলকোট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় গোষ্ঠী কোন্দল থাকতে পারে তৃণমূল সূত্রে খবর। তবে জয়ন্তবাবুর দাবি, ‘‘কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, জানা নেই। তবে দলের কেউ নন।’’ সোমবারই জেলা জুড়ে বিরোধীদের উপরে লাগাতার আক্রমণ ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের সদস্য আভাষ ভট্টাচার্যের দাবি, জেলাশাসক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
রবিবার রাত ১১টা নাগাদ ফের গোলমালের ঘটনা ঘটে বারাবিনর কাঁটাপাহাড়ি এলাকায়। ওই এলাকার সিপিএমের লোকল কমিটির সদস্য শ্রীধর রাউতের বাড়িতে ভাঙচুর চলে। এ ছাড়া সোমবার রানিগঞ্জের সুকান্তপল্লি-সাহেবগঞ্জ, জামুড়িয়া প্রভৃতি এলাকাতেও গোলমালের ঘটনা ঘটে। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির শাসক দলের দিকে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
দুর্গাপুরে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কার্যালয় দখলের অভিযোগ করেছে তৃণমূল। সোমবার ইন্ডিয়ান ওয়েলের বটলিং প্ল্যান্টের ঘটনা। তৃণমূলের অভিযোগ, স্থানীয় একটি কার্যালয়ে জোর করে কংগ্রেসের পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা আগাম খবর পেয়ে পুলিশকে জানাই। কর্মী সমর্থকেরাও হাজির ছিলেন।’’ কংগ্রেসের জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওখানে আগে যারা তৃণমূলে ছিলেন, এখন কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তাই অফিসটিও কংগ্রেসের করে নিয়েছেন।’’ পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত কার্যালয়টিতে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।