মানুষের আশ্বাসেই টেনশন কমানোর ওষুধ খুঁজছেন প্রার্থী

রাত পোহালেই ভোটের ফল। শেষ মুহূর্তের উত্তেজনা এখন প্রার্থীদের চোখে মুখে। কিন্তু টেনশন বাইরে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। পাছে কর্মী-সমর্থকদের মনোবল ভেঙে যায়। তাই নিজেরা যতটা পারা যায় স্বাভাবিক আচারণ করছেন।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

অশোকনগর শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৬ ০৩:০৭
Share:

(উপরে) খবরের কাগজে চোখ রেখেছেন তৃণমূল প্রার্থী ধীমান রায়। (নীচে) খবর শুনছেন সিপিএম প্রার্থী সত্যসেবী কর। ছবি: শান্তনু হালদার।

রাত পোহালেই ভোটের ফল। শেষ মুহূর্তের উত্তেজনা এখন প্রার্থীদের চোখে মুখে। কিন্তু টেনশন বাইরে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। পাছে কর্মী-সমর্থকদের মনোবল ভেঙে যায়। তাই নিজেরা যতটা পারা যায় স্বাভাবিক আচারণ করছেন।

Advertisement

অশোকনগরের বিদায়ী বিধায়ক তথা এ বারের তৃণমূল প্রার্থী ধীমান রায়ের বাড়ি হাবরার হিজলপুকুর এলাকায়। অশোকনগরেও তাঁর বাড়ি আছে। প্রচারে ব্যস্ত থাকার জন্য দুপুরে বাড়িতে খাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। রাস্তায় কোনও দিন খাওয়া হয়েছে, কোনও দিন খালিপেটে শুধু জল খেয়েই কাটিয়েছেন। ভোট মেটার পর থেকে অবশ্য কব্জি ডুবিয়ে দুপুরে বাড়িতেই খাচ্ছেন ধীমানবাবু। মাছ, মাংস ইদানীং আর পছন্দ নয়। দুপুরের মেনুতে ভাতের সঙ্গে প্রায়ই থাকে নিমপাতা বাটা, মুগডাল, আলু পটলের তরকারি। ভোটের পরে পরিবারের সকলকে নিয়ে পুরী বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল ঠিকই, কিন্তু সঠিক প্ল্যানের অভাবে তা আর হয়ে ওঠেনি।

ধীমানবাবুর কথায়, ‘‘সত্যি বলছি ভোটের ফল নিয়ে আমার কোনও টেনশন হচ্ছে না। কারণ জয়ের বিষয়ে আমি নিশ্চিত।’’ এখন তাঁর আফসোস, মানুষ নানা প্রয়োজনে তাঁর কাছে শংসাপত্র নিতে আসছে, কিন্তু এখন তিনি তা দিতে পারছেন না। তবে মানুষকে আশ্বাস দিচ্ছেন, কয়েক দিন পর থেকে তিনিই শংসাপত্র দেবেন। কী ভাবে সময় কাটছে ধীমানবাবুর। প্রত্যেকটি এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে দেখা করে কথা বলছেন তিনি। হাটে-বাজারে গিয়েও কথা বলতে দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে বেড়াবেড়ি, কল্যাণগড় বাজার এলাকায় কীর্তনের আসরেও। কয়েকজন কর্মী-সমর্থক অসুস্থ হয়েছেন জানতে পেরেই তাঁদের দেখতে ছুটে গিয়েছেন। এমনকী, গিয়েছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়কে দেখতেও।

Advertisement

ধীমানবাবুর প্রতিদ্বন্দ্বী জোট প্রার্থী সিপিএমের সত্যসেবী কর এখন জমিয়ে সিনেমা দেখছেন। অনেক দিনের অভ্যেস। তবে ভোটের ব্যস্ততায় সেই শখ লাটে উঠেছিল। আর নিয়ম করে দেখছেন আইপিএলের ম্যাচ দেখতে ভুলছেন না। এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক সত্যসেবীবাবু পরিবারিক সূত্রেই রাজনীতিতে। বাবা ননী কর ছিলেন এলাকার প্রভাবশালী সিপিএম নেতা ও প্রাক্তন বিধায়ক। সত্যসেবীবাবুর দাদা বাবুল কর বর্তমানে জেলা সিপিএম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। ভোটের ফল নিয়ে প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘‘জন্ম থেকেই ভোটের লড়াই দেখছি। ফলে ও সব নিয়ে আমার টেনশন নেই। ফলাফল নিয়ে কোনও গবেষণাও করছি না। কারণ, ভোটের দিন পর্যন্ত মানুষের মনোভাব দেখে আমার মনে হয়েছে ফল আমার পক্ষে সদর্থকই হতে চলেছে।’’

সময় পেলেই পুঙলিয়া, বামনডাঙা, গুমায় আড্ডা মারতে যাচ্ছেন সত্যসেবীবাবু। গোলবাজারে দলীয় কার্যালয়ে গিয়েও সময় কাটাচ্ছেন। আর প্রচুর বাজার করছেন। বললেন, ‘‘বাজারে গিয়ে যেখানে হাত দিচ্ছি, যেন ফোস্কা পড়ছে। দাম বেড়েছে আকাশছোঁয়া।’’

পথেঘাটে বেরোলে অনেকেই ভোটের ফল নিয়ে আশ্বস্ত করছেন বলে জানালেন সত্যসেবীবাবু। বললেন, ‘‘বহু অচেনা মানুষও বলছেন, চিন্তা করবেন না। ফল ভালই হবে।’’

মানুষের এই আশ্বাস আর শুভেচ্ছাই আপাতত টেনশন কমানোর ওষুধ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement