ত্রিশঙ্কুর দিকে তাকিয়ে বিজেপি

বিধানসভা ভোটের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সূর্য-অধীররা যখন ম্যাজিক সংখ্যায় পৌঁছনোর হিসেব কষছেন, বিজেপি তখন তাকিয়ে ত্রিশঙ্কু ফলের আশায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ০৩:৫৭
Share:

বিধানসভা ভোটের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সূর্য-অধীররা যখন ম্যাজিক সংখ্যায় পৌঁছনোর হিসেব কষছেন, বিজেপি তখন তাকিয়ে ত্রিশঙ্কু ফলের আশায়।

Advertisement

কেন?

কারণ বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের মতে, বিধানসভা ভোটের ফল ত্রিশঙ্কু হলে হয় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়ে আবার ভোট হবে, না হলে সরকার গড়ার ক্ষেত্রে তারা নির্ণায়ক শক্তি হবে। অর্থাৎ দুই ক্ষেত্রেই লাভ বিজেপির।

Advertisement

রাজ্য বিজেপি মনে করছে, তাদের সমর্থনে কোনও পক্ষ সরকার গড়লে বিজেপির হাতেই সে সরকারের রাশ থাকবে। আবার রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলে আসল ক্ষমতা থাকে কেন্দ্রের হাতে, যে সরকারটা তাদের দলেরই। ফলে তেমন পরিস্থিতিতেও তারাই হবে নিয়ন্ত্রক শক্তি।

রাজ্যে সাত পর্বের বিধানসভা ভোট মিটল বৃহস্পতিবার। ফল বেরোতে ঠিক দু’সপ্তাহ বাকি। বিপুল গরমে এক মাস ব্যাপী ভোটে হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা যখন একটু জিরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন, বিজেপি তখন স্বপ্ন দেখছে, ১৯ মে তারাই সরকার গঠনের নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠবে। অর্থাৎ, তাদের আশা, ১৯ তারিখ ফল বেরনোর পর যদি দেখা যায় তৃণমূল বা বাম-কংগ্রেস জোট— কেউই ম্যাজিক সংখ্যা ছুঁতে পারেনি, মাঝখানে বেশ কিছু আসন
জিতে আসল চাবিকাঠি হাতে পেয়ে গিয়েছে বিজেপি।

ভোটে তাঁরা কত আসন আশা করছেন?

এই প্রশ্নের জবাবে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘আমরা জ্যোতিষী নই। ফলে কোনও সংখ্যা বলার দরকার কী? একাধিক আসন পাব, এটুকু বলছি।’’ দলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের সংযোজন, ‘‘আমরা নির্ণায়ক শক্তি হব। আমাদের বাদ দিয়ে কেউ সরকার গড়তে পারবে না।’’ সে ক্ষেত্রে বিজেপি বিধায়করা তৃণমূল না বাম-কংগ্রেস জোট— কাকে সমর্থন করবেন? জয়প্রকাশবাবু বলেন, ‘‘সে প্রশ্ন এখন উঠছে কেন? আগে সেতুর কাছে পৌঁছই, তার পরে ঠিক করব, সেটা কী ভাবে পার হব।’’ কিন্তু তৃণমূল তো বিজেপির স্বাভাবিক মিত্র! অতীতে এই দুই দলের জোট ছিল। সে ক্ষেত্রে এ বার ভোটের ফল ত্রিশঙ্কু হলে বিজেপি কি তৃণমূলকে সরকার গড়তে সমর্থন করবে না? জয়প্রকাশবাবুর পাল্টা যুক্তি, ‘‘রাষ্ট্রপতি শাসন হয়ে আবার ভোটও তো হতে পারে। যদি সে রকম হয়, হবে।’’

বিজেপির অন্দরের অবশ্য খবর, ত্রিশঙ্কু ফল হলে তৃণমূলকে সমর্থন দেওয়ার দিকেই ঝুঁকে রয়েছে দলের একাংশ। কিন্তু দলের অন্য অংশের বক্তব্য, মমতা কখনও তাঁর জোটসঙ্গীর উপকার করেননি। বরং, সকলের আগে নিজের রাজনৈতিক সঙ্গীকে শেষ করাটাই তাঁর পুরনো রেওয়াজ। সেই জন্যই এর আগে তৃণমূলকে
সঙ্গে নেওয়ায় এ রাজ্যে বিজেপির ক্ষতি হয়েছে।

তা ছাড়া, সংখ্যালঘু ভোট হারানোর ভয়ে তৃণমূলের পক্ষেও সরকার গড়তে বিজেপির হাত ধরা কঠিন। সব মিলিয়ে তাই রাষ্ট্রপতি শাসনেই তাদের কী কী সুবিধা হতে পারে, তা খতিয়ে দেখছে বিজেপির ওই অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement