উপরে বাঁ দিক থেকে, গোবর্ধন দাস, মানিক রায়, বিজন মণ্ডল। মাঝে বাঁ দিক থেকে, রাধাকান্ত রায়, মহেন্দ্র কোঁয়ার ও রানাপ্রতাপ গোস্বামী। নীচে বাঁ দিক থেকে, কলিতা মাঝি, বলরাম ব্যাপারী ও মথুরা ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় পুরোদমে প্রচারে নামা যাচ্ছে না বলে জেলার নানা এলাকার বিজেপি কর্মীরা অভিযোগ তুলছিলেন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের অন্য নানা কেন্দ্রের সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানেরও ১৬টি কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করল বিজেপি। তার মধ্যে ১৪টি আসনে গত বারের থেকে প্রার্থী বদল করা হয়েছে। নতুন প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ন’জন।
পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রে বিজেপি এ বার নতুন মুখ প্রার্থী করেছে। প্রার্থী হয়েছেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) মলিকিউলার মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক, পূর্বস্থলীর নিমদহের গোবর্ধন দাস। বিশ্বভারতী থেকে তিনি পিএইচডি করেছেন। জেএনইউ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা, চিন-সহ নানা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে তিনি বলেন, ‘‘পূর্বস্থলীর নিমদহে আমার বাড়ি। কয়েকমাস টানা যাতায়াত করেছি। মানুষ আমাকে ঘরের ছেলে বলেই চেনেন। শুক্রবার গ্রামে পৌঁছেই প্রচার শুরু করব।’’
বিজেপির বর্ধমান সদর জেলা সংগঠনে ৯টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। দল সূত্রের খবর, সেগুলিতে আরএসএস-যোগ থাকা নেতাদের প্রার্থী করা হয়েছে। রায়না কেন্দ্রের প্রার্থী মানিক রায়ের বাড়ি নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের পুরশুনা গ্রামে। পেশায় শিক্ষক মানিকবাবু সঙ্ঘের প্রচারক ছিলেন। ২০১৮ সালে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর দাবি, “বিজেপির ২০০টি আসনের মধ্যে রায়নার নামটাও থাকবে।’’
১৯৯০ সাল থেকে সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন খণ্ডঘোষের প্রার্থী বিজন মণ্ডল। পেশায় শিক্ষক বিজনবাবুর বাড়ি রায়নার শ্যামসুন্দরে। ২০১৮ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়ে দলের পর্যবেক্ষক-সহ বেশ কয়েকটি পদে ছিলেন। প্রার্থী হওয়ার পরেই তিনি এ দিন সেহেরাবাজারে প্রচার করেন। বর্ধমান উত্তরে বিজেপি প্রার্থী করেছে জেলা শিক্ষক সেলের আহ্বায়ক রাধাকান্ত রায়কে। ভাতারে প্রার্থী স্থানীয় কুলচণ্ডা গ্রামের বাসিন্দা মহেন্দ্র কোঁয়ার। স্নাতকোত্তর পাশ করা মহেন্দ্রবাবু পেশায় ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী। সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে জড়িত থাকা মহেন্দ্রবাবু ২০০৬ সাল থেকে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দাদু ধাত্রীপদবাবু ২০১১ সালে ভাতার বিধানসভায় বিজেপির প্রার্থী ছিলেন।
আউশগ্রামের বিজেপি প্রার্থী কলিতা মাঝি গুসকরা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝপুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা। পেশায় পরিচারিকা কলিতাদেবীও সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা যায়। প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পরে তিনি বলেন, ‘‘অন্যের বাড়িতে কাজ করার সময়েই প্রার্থী হয়েছি বলে জানতে পারি। মানুষের পাশে থাকতে চাই।’’ মেমারির পাল্লা ক্যাম্পের বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক বলরাম ব্যাপারীকে জামালপুরে প্রার্থী করা হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘জামালপুরের নিচু স্তর পর্যন্ত আমার যোগাযোগ রয়েছে।’’
দলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে’ নাম জড়িয়েছিলে দলের প্রাক্তন জেলা (বর্ধমান সদর) সভাপতি সন্দীপ নন্দীর। কয়েক সপ্তাহ আগে জেলা সভাপতি পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেয় দল। এ দিন বর্ধমান দক্ষিণের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১১ সালেও তিনি এই কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলেন। এ দিন সন্ধ্যায় সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দেওয়ার পরে সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘দল এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে চলেছে। বর্ধমানের মানুষও তার অংশীদার হবেন বলে আমার বিশ্বাস।’’ ২০১১ সালের পরে বুদবুদের রণডিহার তপন বাগদিকেও ফের এ বার গলসি কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে বিজেপি। একটি মুদির দোকান চালানোর পাশাপাশি চাষ-আবাদ করেন তিনি। গত বারের মতো এ বারও প্রার্থী করা হয়েছে মেমারির ভীষ্মদেব ভট্টাচার্য ও পূর্বস্থলী দক্ষিণের রাজীব ভৌমিককে।