ই-স্কুটি চালানো নিয়ে মমতাকে ব্রিগেড থেকে আক্রমণ মোদীর। নিজস্ব চিত্র।
ক’দিন আগেই ই-স্কুটার চড়ে, ই-স্কুটার চালিয়ে নজর কেড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবারের ব্রিগেডের বক্তৃতায় সেই স্কুটার ‘চড়েই’ মমতাকে কটাক্ষের নিশানা করলেন নরেন্দ্র মোদী। জুড়ে দিলেন মমতার পুরোন কেন্দ্র ভবানীপুর এবং নতুন কেন্দ্র নন্দীগ্রামকে। বললেন, ‘‘ভবানীপুরে তো আপনার স্কুটি ভাল চলছিল। দেখলাম আপনার স্কুটি নন্দীগ্রামের দিকে টার্ন নিয়েছে। সেখানে যদি আপনার স্কুটি উল্টে যায় তা হলে আমাদের কিছু বলবেন না। আমরা কিন্তু আপনার ভালই চাই।’’
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি স্কুটার চড়ে কালীঘাটের বাসভবন থেকে নবান্নে যান মুখ্যমন্ত্রী। পরে নবান্ন থেকে বাড়ি ফেরার সময় নিজেই স্কুটি চালান। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই ছিল সেই স্কুটার অভিযান। সেই প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘‘কিছু দিন আগে স্কুটি সামলাচ্ছিলেন দিদি। সবাই ভয় পাচ্ছিলেন, আপনি পড়ে গিয়ে আঘাত না পান। ভাগ্যিস পড়ে যাননি। নইলে যে রাজ্যে স্কুটিটা তৈরি হয়েছে, সেই রাজ্যকেই শত্রু বানিয়ে ফেলতেন। তাই ভাল হয়েছে পড়ে যাননি। যদি গুজরাতে স্কুটিটা তৈরি হত, গুজরাত আপনার শত্রু হত। দক্ষিণের কোনও রাজ্যে স্কুটিটা তৈরি হলে তাদের সঙ্গে আপনার শত্রুতা হত। যদি উত্তরের কোনও রাজ্যে তৈরি স্কুটি হত, তা হলে তাদের সঙ্গে আপনার শত্রুতা হয়ে যেত। আপনি ভাল ভাবে স্কুটি চালিয়েছেন এতেই আমি খুশি।’’ এর পরেই ভবানীপুর-নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গ টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী সমাবেশে পৌঁছানোর কিছু ক্ষণ আগেই ব্রিগেডের মঞ্চে বক্তৃতা করেন নন্দীগ্রামে মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘‘মাননীয়াকে নন্দীগ্রামে হারাবই, হারাবই, হারাবই!’’ গত বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লিতে বিজেপি-র প্রার্থী বাছাই সংক্রান্ত বৈঠকে এই শুভেন্দুকেই মোদী বলেছিলেন, ‘‘শুভেন্দু, মমতাদিদি আপকো নেতা বানাকেহি ছোড়েঙ্গি।” অর্থাৎ মমতাদিদি আপনাকে নেতা বানিয়েই ছাড়বে। বিজেপি নেতারা মনে করছেন, মমতার স্তরের নেত্রীর নিজে এগিয়ে এসে নন্দীগ্রামে শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থী হওয়াটা শুভেন্দুর রাজনৈতিক উচ্চতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
রবিবার মোদী নন্দীগ্রাম নিয়ে মমতাকে কটাক্ষ করার সময় স্বাভাবিক ভাবেই চওড়া হাসি ছিল শুভেন্দুর মুখে। তবে মমতার আর এক পুরোন সহকর্মী এই সময় নিজের অট্টহাসি চেপে রাখতে রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছিলেন। মোদী যখন স্কুটার-কটাক্ষ চালাচ্ছেন, তখন সদ্য গলায় ওটা গেরুয়া উত্তরীয়ে সেই হাসি সংযত রাখার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী।