এত টাকা আসছে কোথা থেকে

হেলিকপ্টার নিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে বিঁধলেন বিমান

প্রশ্নটা ছিলই। হুগলিতে ভোটের দিন কয়েক আগে ফের তা উস্‌কে দিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। ভোটের প্রচারে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টারের বিপুল খরচের উৎস কি, সেই প্রশ্ন তুললেন রীতিমতো ভাড়ার হিসেবনিকেশ পেশ করে।

Advertisement

প্রকাশ পাল

হরিপাল শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২০
Share:

প্রশ্নটা ছিলই।

Advertisement

হুগলিতে ভোটের দিন কয়েক আগে ফের তা উস্‌কে দিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।

ভোটের প্রচারে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টারের বিপুল খরচের উৎস কি, সেই প্রশ্ন তুললেন রীতিমতো ভাড়ার হিসেবনিকেশ পেশ করে।

Advertisement

জেলায় হরিপাল‌ে দলীয় প্রার্থী যোগীয়ানন্দ মিশ্রের সমর্থনে সভা করতে এসেছিলেন বিমানবাবু। সেখান থেকেই তৃণমূলকে নিশানা করে এদিন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের ছোড়া একের পর এক তিরের মোক্ষম ছিল এটাই। বক্তব্যর মাঝে দর্শকের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ‘‘তৃণমূলনেত্রী এখানে সভা করতে কিসে চেপে এসেছিলেন?’’ উত্তর আসে, ‘‘হেলিকপ্টারে’’। এরপরই হাতে একটি কাগজ নিয়ে বিমানবাবু বলতে থাকেন, ‘‘আমার কাছে একটা হিসেব আছে। একটা হেলিকপ্টারের ভাড়া ঘণ্টায় ৫১ হাজার ১১৫ টাকা। অর্থাৎ দিনে ১২ লক্ষ ২৬ হাজার ৭৬০ টাকা। তা হলে এক মাসে কত? ৩ কোটি ৬৮ লক্ষ ২ হাজার ৮০০ টাকা। দু’মাসে সেই খরচ গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ৭ কোটি ৩৬ লক্ষ ৫ হাজার ৬০০ টাকায়।’’ একটু থেমে ফের বলতে থাকেন, ‘‘একটা নয়, ওরা তিনটে হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে। একটা ওদের সুপ্রিমোর, একটা ভাইপোর। আর একটা স্ট্যান্ডবাই থাকে। যদি ওই দু’টো খারাপ হয়! মাঝে মধ্যে অবশ্য মুকুলও চড়ে। তা হলে একটা হেলিকপ্টারের দাম ৩ দিয়া গুন করেন! অঙ্কটা ২২ লক্ষ টাকায় দাঁড়াবে।’’ এর পরে যোগ করেন, ‘‘উনি তো হাওয়াই চটি পরেন। আপনারাও অনেকে পরেন। আপনারা কখনও স্বপ্ন দেখেন, হাওয়াই চটি পরে হেলিকপ্টার চড়বেন! অথচ উনি কপ্টারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এত টাকা আসছে কোথা থেকে?’’

ফের জনতার উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তৃণমূল আপনাদের থেকে ৫, ১০, ২০ টাকা চাঁদা তুলেছে?’’

জনতা সমস্বরে চিৎকার ‘না’। বিমানবাবুর ফের প্রশ্ন, ‘‘সিপিএম আপনাদের থেকে চাঁদা তোলে?’’ ফের জনতার চিৎকার, ‘হ্যাঁ’। বিমানবাবু বলেন, ‘‘মানুষের থেকে চাঁদা তুল‌ে আমরা দল চালাই। কিন্তু ওরা কোথা থেকে টাকা পায়, কেউ জানে না। নির্লজ্জ বেহায়া দল একটা। অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে বিচারাধীন জেলবন্দি ভাগ্নে মদন আবার প্রার্থী হয়েছেন।’’

এ দিন হরিপালের বিধায়ক ও তৃণমূল প্রার্থীকেও এক হাত নেন বিমানবাবু। বেচারাম মান্নার উপার্জন নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আগের বার হলফনামায় যে সম্পত্তির উল্লেখ করেছিলেন উনি, এ বার তা ২৩৮ শতাংশ বেড়েছে। কি করে হল? ওঁকে এ বার বেচারা তৈরি করতে আমাদের প্রার্থীকে ভোট দিন। উনি নাকি তিন ক্লাস না চার ক্লাস পাশ। তবে সকলের পড়াশোনা ভাল নাই-ই হতে পারে। কিন্তু আচার-ব্যবহার তো ভাল হয়।’’

সিঙ্গুরের প্রসঙ্গ তুলে বিমানবাবু বলেন, ‘‘সিঙ্গুর যেন এখন লাশকাটা ঘর। অথচ দ্বিতীয় জামশেদপুর হওয়ার সুযোগ ছিল সিঙ্গুরের সামনে। যিনি এখানকার তৃণমূল প্রার্থী, তাঁর বাড়ি সিঙ্গুরে। ছলে বলে কৌশলে সিঙ্গুর থেকে শিল্প তাড়িয়েছেন এখনকার মুখ্যমন্ত্রী। আর এই কেন্দ্রের প্রার্থী তাঁরই প্রিয়পাত্র।’’

বিমানবাবুর তোপের জবাবে কী বলছেন বেচারামবাবু?

তাঁর কথায়, ‘‘আমি জানি উনি শিক্ষিত লোক। কিন্তু আমার সম্পর্কে যা বলেছেন, তা খোঁজ নিয়ে বললে ভাল করতেন। মিথ্যচারিতা ওঁদের রক্তে। আজও ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যা বললেন। এ ভাবে হরিপাল বা বাংলার মানুষকে বোকা বানানো যাবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement