মদন মিত্রকে তলব ইডি-র। —ফাইল চিত্র।
বিরতি কাটিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরেছিলেন সবে। কামারহাটিতে তাঁকে প্রার্থীও ঘোষণা করেছে তৃণমূল। সারদা মামলায় জামিনে মুক্ত মদন মিত্রকে আবার ডেকে পাঠাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আগামী ১৮ মার্চ, বৃহস্পতিবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে মদনকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সারদা সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি-সহ হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে। একই সঙ্গে এক শিল্পপতিকেও ডেকে পাঠিয়েছে ইডি।
এই মুহূর্তে সারদা মামলার তদন্ত করছে ইডি এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিবিআই)। সেই মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ২০১৪-র ডিসেম্বরে তৎকালীন পরিবহণ মন্ত্রী মদন। ২০১৬-র সেপ্টেম্বর মাসে জামিন মঞ্জুর হয় তাঁর। তার পর থেকে নেটমাধ্যমে অনুরাগীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলেও (‘এমএম লাইভ’ নামে তাঁর ফেসবুক লাইভ যথেষ্ট জনপ্রিয় বলেই নেটাগরিকদের কাছে পরিচিত) ‘সক্রিয়’ রাজনীতিতে সে ভাবে দেখা যায়নি তাঁকে।
তবে নীলবাড়ির লড়াইয়ে সম্প্রতি ফের তাঁর হাতে কামারহাটির দায়িত্ব তুলে দেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর ‘ও লাভলি’ শব্দবন্ধ-সহ মদনের গানের ভিডিও নেটমাধ্যমে ‘ভাইরাল’। তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর আবার পুরোদমে মাঠে নেমেছিলেন মদন। তার পর এক সপ্তাহও কাটেনি। আবার তদন্তকারী সংস্থার কাছে হাজিরা দেওয়ার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছেন মদনকে। শুক্রবার সংস্থা সূত্রে ওই খবর মিলেছে।
ঠিক কী কারণে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে আবার ডেকে পাঠানো হচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। তবে ইডি সূত্রে খবর, তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। আর্থিক তছরুপের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি নিয়ে তলব করা হয়েছে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে। এ নিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালের তরফে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি মদন। এখন দেখার, মদন তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে ‘সহযোগিতা’ করেন। না কি তাদের এড়িয়ে যান। তৃণমূলের একাংশের দাবি, মদনকে ওই মামলায় ‘সাক্ষী’ হিসেবে ডেকে পাঠানো হয়ে থাকতে পারে। কারণ, সারদা মামলার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন নেতা এবং সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রের লোকজনকে ‘সাক্ষী’ হিসেবেই ডাকা হচ্ছে বলে তাঁরা দাবি করেছেন। তেমন হলে এই পোড়খাওয়া রাজনীতিক তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতাই করতে চান।
তবে একা মদন নন, সারদা মামলায় সম্প্রতি দু’-দু’বার ইডি-র সামনে হাজিরা দেন তৃণমূলের মুখপাত্র তথা প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ কুণাল ঘোষ। শুক্রবার তৃণমূলের এক বিদায়ী বিধায়ক সমীর চক্রবর্তীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি। সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে একাধিক বার তিনি বৈঠক করেছিলেন বলেই খবর। প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ার তালডাংরার বিধায়ক সমীর এবার আর ভোটে লড়ছেন না। তিনি তাঁর ওই ইচ্ছার কথা দলকে জানিয়েও দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তিনি ভোটে লড়তে নয়, প্রচার করতে ইচ্ছুক। দল তাঁর সেই ইচ্ছা মেনে নিয়েছে। তবে ভোটের আগে এ ভাবে দফায় দফায় বিভিন্ন নেতাকে বিবিধ তদন্তকারী সংস্থা ডেকে পাঠানোয় অসন্তুষ্ট জোড়াফুল শিবির। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার রাজনৈতিক কাজে গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে কাজে লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ করছে তারা।